আমাদের ভারত, ১৩ জুলাই: বিহারের ভোটার তালিকায় অন্য একাধিক দেশের ভালো সংখ্যক নাগরিকের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। বুথ স্তরের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে এই বিষয়টি জানতে পেরেছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্র উল্লেখ করে এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনের তরফে এখনো এই সংক্রান্ত কোনো কথা জানানো হয়নি। কিন্তু কমিশনের আধিকারিকদের উল্লেখ করে পিটিআই জানিয়েছে, প্রচুর সংখ্যক বিদেশি ভোটার রয়েছে বিহারে।
চলতি বছরের অক্টোবর, নভেম্বরের বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সেখানকার ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন করতে উদ্যোগী হয় নির্বাচন কমিশন। ভোটারদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথি দিতে বলা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবে বুথ স্তরের আধিকারিকরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। ভোটারদের পরিচয়, নথি যাচাই করছেন। সূত্রের খবর, সেটা করতে গিয়েই বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমারের নাগরিকদের খোঁজ মিলেছে, যারা বিহারে বসবাস করছেন।
কমিশন সূত্রে দাবি, বেআইনি এই সমস্ত মানুষের নাম চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় থাকবে না। ওই তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩০ সেপ্টেম্বর। সমস্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হবে। তারপর চূড়ান্ত হবে ভোটার তালিকা।
২৫ জুন থেকে বিহারে এস আই আর- এর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কমিশন। ভোটারদের মধ্যে বিলি করা হয় ফর্ম। তা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ জুলাই। এরপর একটি খসড়া তালিকা ১ আগস্ট এর মধ্যে তৈরি করা হবে।কমিশনের তরফে ১১টি নথির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যেগুলি পরিচয়ের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই নথিগুলি ভোটারদের জমা দিতে হবে। এই তালিকায় আধার কার্ড, রেশন কার্ডের মতো সহজলভ্য নথি রাখা হয়নি।
কমিশনের এই ভোটার তালিকা সংশোধনের সিদ্ধান্তে প্রথম থেকে আপত্তি তুলেছিল বিরোধীরা। অভিযোগের ফলে বহু মানুষ ভোটাধিকার হারাবেন। যারা এতদিন ধরে ভোট দিয়ে আসছেন তাদের কেন ভোটাধিকারের প্রমাণ দিতে হবে? পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং অন্যান্যরা এই সংক্রান্ত আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও করেছেন। তাদের আর্জি, অবিলম্বে কমিশনের এস আই আর স্থগিত করা হোক। বিহারের মতো অন্য কোনো রাজ্যে যাতে এই ধরনের নির্দেশ না হয় তাও নিশ্চিত করুক আদালত।
গত ১০ জুলাই এই সংক্রান্ত সমস্ত মামলার একত্রে শুনানি হয় আদালতে। এস আই আর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ না করলেও আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড ও পরিচয় পত্র বিবেচনা করার কথা কমিশনকে বলেছে বিচারপতি। ২৮ জুলাই আবার এই মামলার শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে।
শনিবার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিহারের সকল ভোটারের কাছে ফর্ম বিলি করার কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। যাদের নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাওয়া গিয়েছে তাদের ফর্ম দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৮০.১১ শতাংশ ফর্ম জমা পড়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। যার অর্থ, প্রতি পাঁচ জন ভোটারের মধ্যে চারজনই ফর্ম জমা দিয়েছেন ইতিমধ্যেই।