সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, বারাসত, ২৫ আগস্ট: দীর্ঘ দিন লকডাউনের ফলে কাজ হারায় যুবক। সময় মতো সুদ ও আসল টাকা না দিতে পারায় সুদখোরদের অত্যাচারে আত্মঘাতী হল যুবক। মৃতের নাম ভজন বিশ্বাস। মাত্র ৩৫ হাজার টাকার জন্য তার বাইক, সাইকে ও মোবাইল কেড়ে নিয়ে, মায়ের নামে নোংরা কথা বলে মারধরও করে বলে অভিযোগ। এমনকি টাকা না পেলে খুনেরও হুমকি দেয় প্রতিবেশী সুদখোর যুবকরা। তাদের ভয়ে রাস্তায় বেরনো দায় হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত থানার প্রমোদ নগরের বাসিন্দা পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভ ভজন বিশ্বাসের।
সুইসাইড নোটে লিখে যাওয়া সূত্রে জানা যায়, ৩৫ হাজার টাকার প্রতিদিন ৪৫০ টাকা সুদ দিতে হত। কাজের সুবিধার জন্য একটি স্কুটিও কিনেছিলেন সেই সময়। কিন্তু লকডাউন শুরুর কিছুদিন পর কাজ হারায় ভজন। ধারের টাকার কিস্তি শোধ করতে না পারায় এলাকার বাসিন্দা টাইসন, যুগোল, প্রবীর নামে তিন যুবক চাপ দিতে থাকে। চড়া সুদের মহাজনদের অত্যাচার ক্রমশ বাড়তে থাকে। সদ্য কেনা স্কুটিটি প্রথমে তারা কেড়ে নেয়। সুদ ও আসল ফেরাতে না পারায় সাইকেল মোবাইলও কেড়ে নেয়। ভজনের মাকে নিয়ে অশ্লীল নোংরা কথা বলে। এমনকি খুনের হুমকিদেয় অভিযুক্তরা।
সেই ভয়ে ভজন রাস্তায় বেরতে পারছিল না। মহাজনের অত্যাচারে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া বেকার ভজন অত্মহত্যা করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। নিজের সুইসাইড নোটে এই কাহিনী সে লিখে যায়। পরিবার পুলিশের কাছে এই তিন সুদখোরের বিরুদ্ধে বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পরিবারের দাবি, লকডাউনে কাজ না হারালে ভজন হয়তো ঋণের টাকা সুদে আসলে শোধ করে দিত। একটু সময় দিলেও মাত্র ৩৫ হাজার টাকাটা শোধ করাটা বড় বিষয় ছিল না। কিন্তু চড়া সুদের এই মহাজনের অত্যাচারে শেষ করে দিল তরতাজা যুবককে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ টাইসন, যুগোল ও প্রবীরকে সোমবার রাতে আটক করেছে। মঙ্গলবার বারাসাত জেলা আদালতে তোলা হয় অভিযুক্তদের পুলিশ হেফাজত চেয়ে।

