“ছোটজাত” বলে গোঘটে মন্দিরে পুজো দিতে পারলেন না মহিলারা, চরণামৃতের বদলে মাটি খেয়ে উপোস ভঙ করলেন

গোপাল রায়, আরামবাগ, ১২ এপ্রিল: হুগলির আরামবাগের গোঘাট থানার শালিঞ্চা তারা মন্দিরে বেশ কয়েক জন মহিলাকে জাতের বিচার করে পুজো দিতে বাধা। মন্দিরের ব্রাহ্মণরা তাঁদের বাধা দেন। অনেক অনুরোধ করা সত্ত্বেও শিবের মাথায় জল ঢালতে না পেরে মন্দিরের গেটের পাশে পুজার সামগ্রী রেখে চলে আসেন তাঁর।

আজ নীলষষ্টী । বিভিন্ন জায়গায় পুজো চলছে। লকডাউনে নিয়ম মাফিক পুজো দিচ্ছেন ভক্তরা। গোঘাটের শালিঞ্চার দাসপাড়া থেকে পুজো দিতে গিয়েছিল বেশ কয়েকজন মহিলা। কিন্তু তাদের মন্দিরে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাদের, পুজোও নেওয়া হয়নি। কারণ তারা নিচু জাত। এরপর তারা মন্দিরের গেটের সামনে পুজোর সামগ্রী রেখে দূর থেকে প্রণাম করে মন্দিরের সামনে থেকে মাটি নিয়ে চলে আসেন। এই নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

দাসপাড়ার বাসিন্দা রিতা দাস, ডলি দাস বলেন, আজ নীল পুজো ছিল আমরা কয়েকজন মহিলা মিলে পুজো দিতে গিয়েছিলাম।কিন্তু আমাদের মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করতে নিষেধ করেন পুরোহিতরা এবং আমাদের পুজো নিতে অস্বীকার করে। কারণ আমরা নিচু জাত বলে জানানো হয়। এরপর রাগে ও দুঃখে মন্দিরের গেটের সামনে পূজার সামগ্রী ঢেলে রেখে দিয়ে আসি। এই নীল পূজাতে বাড়ির মহিলারা উপোস করে থাকেন পুজোর পর চরণামৃত খেয়ে উপোস ভঙ করতে হয়। কিন্তু পুজো দিতে না পারায় আমরা মন্দিরের সামনে থেকে একটু মাটি নিয়ে চলে আসি। সেই মাটি খেয়ে আমরা উপোস ভঙ করি। শুধু এইবারই নয় প্রতিবারই এই নিয়ম চলে আসছে।

ওই এলাকার বাসিন্দা অনুপ কুমার ঘোষ এদের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছেন। অনুপবাবু বলেন, ওই পাড়ায় বাসিন্দাদের কোনোদিনই বারোয়ারি কালী পূজা বা বারোয়ারি শিব মন্দিরে পুজো দিতে দেওয়া হয় নাl এই আচরণে আমি বহুবার প্রতিবাদ করেছি। এমনকি বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছি। পুরোহিত অমিয় চ্যাটার্জি বলেন, এটা গ্রামের দীর্ঘদিনের সমস্যা।তবে আমি তাদেরকে চরণামৃত দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু নেয়নি। এর বেশি কিছু আমি জানি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *