Voter list, Rampurhat, মৃত্যু হয়েছে স্ত্রীর, ভোটার তালিকায় নাম বাদ স্বামীর

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৩ মার্চ: বছর পাঁচেক আগে মারা গিয়েছেন স্ত্রী। কিন্তু ভোটার তালিকায় গত লোকসভা পর্যন্তও তিনি ছিলেন জীবিত। ফলে ভোটের সময় ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ভোটও পড়ে গিয়েছিল বলে দাবি পরিবারের। কিন্তু জীবিত থেকেও ভোটাধিকার নেই স্বামীর। বঞ্চিত সরকারি সুবিধা থেকেও। সরকারি সুবিধা পাবেন কিভাবে, তিনি তো কাগজ কলমে মৃত। মৃত মানুষ ভোট দিয়ে যেতে পারেন, তবে সরকারি সুবিধা কখনোই পেতে পারেন না, এমনই অদ্ভূত ভূতুড়ে ভোটার তালিকার হদিশ মিলল বীরভূমের রামপুরহাট বিধানসভার নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের কানাইপুর সংসদে।

ওই সংসদের হতদরিদ্র ধীরেন মাল জানতে পারেন তিনি মৃত। প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘোরাফেরা করেও তিনি নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে পারেননি। ফলে এখন ভিক্ষাকে জীবিকা করে কোনরকমে মৃতপ্রায় হয়ে চলাফেরা করছেন। তবে বছর পাঁচেক আগে মৃত স্ত্রী ভাসানি মাল ভোটার তালিকায় ২০২৪ সাল পর্যন্তও ছিলেন জীবিত। ভোটের সময় আসেন, আর ভোট দিয়ে চলে যান। মৃত স্ত্রীর নামে বার্ধক্য ভাতাও ঢুকছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে, কিন্তু টাকা তোলা যাচ্ছে না। এদিকে ধীরেন মালকে মৃত ঘোষণা করায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে বার্ধক্য ভাতা পান না। চরম আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটছে তাঁর। এই বয়সে বেঁচে থাকার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। ভিক্ষাকে জীবিকা করে কোনরকমে জীবন মরণের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

ধীরেন মলের দাবি, প্রায় পাঁচ বছর আগে তার ভোটার তালিকায় নাম বাদ দিয়েছে, গত পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে ভোটার কার্ড নিয়ে ভোট দিতে গেলে তাকে বুথ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ জানতে গেলে বলা হয় তিনি মৃত। তাই তার ভোটার তালিকায় নাম নেই। অথচ তার স্ত্রীর মৃত্যু হলেও তার নাম ছিলো ওই ভোটার তালিকায়। বার বার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে বলেও এখনো তার নাম ভোটার তালিকায় ওঠেনি। ধীরেন মালের নাম যাতে ভোটার তালিকায় ওঠে তার ব্যবস্থা নেওয়ায় আস্বাস দিয়েছে প্রশাসন থেকে তৃণমূলের দলীয় নেতৃত্ব।

তৃণমূলের নারায়ণপুর অঞ্চল সভাপতি মিলন শেখ বলেন, “বিষয়টা আমরা জানি না। হয়তো স্ত্রীর নাম বাদ দিতে গিয়ে স্বামীর নাম বাদ দিয়েছে। তবে তাঁর নাম যাতে ভোটার তালিকায় ওঠে তার ব্যবস্থা করবো। একই সঙ্গে যাতে বার্ধক্য ভাতা পায় সেই বিষয়টাও দেখা হবে।”

বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মণ্ডল বলেন, “ভোটার তালিকায় গড়মিলের বিষয়টি আমরাই প্রথম অভিযোগ করেছি। মৃত মানুষের ভোটেই তো তৃণমূল ক্ষমতায় রয়েছে। তাছাড়া কানাইপুর সংসদ বিজেপি অধ্যুষিত। ফলে পরিকল্পিত ভাবে ধীরেনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *