আমাদের ভারত, ১৩ এপ্রিল: ওয়াকফ হিংসায় উত্তপ্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ। এর মাঝে গতকাল এই ইস্যুতে প্রথমবার মুখ খুলেছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়ে বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছেন অভিষেক। নাম না করেই তিনি বলেছেন, কেউ কেউ চাইছে বাংলা জ্বলুক। অভিষেকের এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতার ট্যাবলেট খাইয়ে সমগ্র হিন্দু সমাজকে প্রান্তিক করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তোপ দেগেছেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও।
এনআই’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুকান্ত মজুমদার বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে গত ৭৫ বছর ধরে হিন্দুরা এই সংলাপ শুনে আসছে। ধর্মনিরপেক্ষতা ট্যাবলেট খাইয়ে সমগ্র হিন্দু সমাজকে প্রান্তিক করে দেওয়া হয়েছে। হর গোবিন্দ দাস এবং তার ছেলে চন্দন দাস উভয় পিতা পুত্র মারা গেছেন। কী হচ্ছে? সরকার আছে কি নেই। এই সরকার নিজেকে সম্পূর্ণরূপে জেহাদিদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। অভিষেক ব্যানার্জি যিনি পশ্চিমবঙ্গ বা মুর্শিদাবাদ সম্পর্কে জানেন না, তিনি লাফালাফি করে বড় বড় কথা বলছেন। সুকান্তবাবুর দাবি, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী মন্ত্রী থাকাকালীন হিন্দুদের বিরুদ্ধে যে ধরনের উস্কানিমূলক কথা বলেছেন তাতে গ্রেপ্তার করা উচিত।
এর আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, উন্নয়নের ইস্যুতে রাজনৈতিকভাবে তাদের সঙ্গে লড়াই করতে ব্যর্থ হওয়ার পরেই অনেকেই ধর্মের নামে বিভেদের বীজ বপন করতে চাইছে। এভাবেই বাংলায় অস্থিরতা ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। তিনি সকলের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করছেন এবং বাংলা সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে অখুন্ন রাখার আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমাদের সকলকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে, কেউ কেউ চাইছে বাংলা জ্বলুক।”
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় হিংসা ছড়িয়েছে। তার জেরে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এর মধ্যে রয়েছেন একজন কিশোর। ১১ এপ্রিল গুলি বিদ্ধ হয়েছিল সে। এদিকে ১২ এপ্রিল সামসেরগঞ্জে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। ফলে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে এলাকায়। বর্তমানে বিএসএফ টহল দিচ্ছে সেখানে।
জানাগেছে, সামশেরগঞ্জে রাণীপুরের জাফরাবাদে ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে বাবা ও ছেলেকে পেটানো হয়। তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। এরপর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তাদের বাড়ি ও টোটো। অভিযোগ, পুলিশকে সেই সময় বারবার ফোন করা হলেও পুলিশ আসেনি।
অন্যদিকে, ১২ এপ্রিল ধুলিয়ান পুরসভাতেও ভাঙ্গচুর চালানো হয়েছে। একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙ্গচুর চালানো হয় ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। একটি শপিং মলেও লুটপাট চালানো হয়। মুর্শিদাবাদে হিংসার অভিযোগে এখনো পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।