সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ১৯ নভেম্বর: স্কুলে অনিয়মিত আসেন প্রধান শিক্ষক। ফলে পড়াশোনা লাটে উঠছে ছাত্র ছাত্রীদের। এই অভিযোগ করে ওই শিক্ষককে স্কুলের কাছে একটি খুঁটিতে বেঁধে রেখে শাস্তি দিলেন অভিভাবক ও গ্রামবাসী। শিক্ষক সমাজের ওই কলঙ্কিত ঘটনাটি ঝালদা থানার পুস্তি গ্রামের। ঝালদা তিন নম্বর চক্রের অন্তর্গত পুস্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ওই অবস্থা থেকে রেহাই দেয় পুলিশ। দড়ি থেকে মুক্ত করে অভিযুক্ত দুই গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করে ঝালদা থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম চন্দ্র কুমার ও গুরুদাস পরামানিক। দুই জনেরই বাড়ি পুস্তি গ্রামে। মঙ্গলবার পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হয় তাঁদের।
জানা গিয়েছে, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপক গাঙ্গুলি নিয়মিত সময়মতো আসেন না। চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে ওই স্কুলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই পুরানো অভ্যাস রয়েই যায় ওই শিক্ষকের। স্কুলে অনুপস্থিত থাকার ফলে পড়াশোনা ঠিক মতো হত না। মিড মিল থেকে বঞ্চিত থাকত পড়ুয়াড়া। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও ফল হয়নি। এর প্রতিবাদ করে একবার ওই শিক্ষককে তালা বন্দি করে রেখেছিলেন গ্রামবাসীরা। শিক্ষক সেখান থেকে মুক্ত হলেও স্কুল তালা দিয়ে এক সপ্তাহ বন্ধ রেখেছিলেন গ্রামবাসীরাই। ওই সময় পঠন পাঠন হত পাশে থাকা দুর্গামন্দিরে। ওই সময় প্রশাসনিক আধিকারিকরা স্কুলে গিয়ে ওই শিক্ষকের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়েছিলেন। এরপর গ্রামবাসীরা স্কুলের তালা খুলে দিয়েছিলেন।
এর কিছু দিন যেতে না যেতেই ফের একই ভাবে স্কুলে যেতেন না ওই শিক্ষক বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। পুঞ্চা থানার বদড়া গ্রামের বাসিন্দা দীপক গাঙ্গুলি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। সেখানে নানা অভিযোগের কারণে তিন বার বদলি করা হয় ওই শিক্ষককে। শেষ বার বদলি হয়ে তাঁকে পাঠানো হয় ঝালদার পুস্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানেও তাঁর স্বভাব ও অভ্যাস বদল হয়নি। আর এই কারণে ক্ষেপে যান গ্রামবাসীরা। যদিও শিক্ষকের শত বদগুণ থাকলেও এই ভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় শাস্তি দেওয়ার তীব্র নিন্দা করেছে জেলার শিক্ষক মহল।