আমাদের ভারত, ২৭ মার্চ: শেষ কয়েক দশকেই তাপপ্রবাহের কারণে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সদ্য প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই কথা জানিয়ে বলা হয়েছে আগামী কয়েক দশকে ভারতের একাধিক জায়গায় তাপপ্রবাহ এত তীব্র হয়ে উঠবে যে নাজেহাল হতে হবে মানুষকে। দেশের মৌসম ভবন জানিয়েছে, মার্চের শেষ থেকেই জ্বালাপোড়া গরম পড়তে চলেছে দেশজুড়ে। তাপমাত্রা সহনশীলতার সীমা ছাড়িয়ে যাবে। ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহের কবলে পড়বে রাজস্থান, গুজরাট, কর্ণাটক।
তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৌসম ভবন জানাচ্ছে, ভারতের কিছু এলাকায় তাপমাত্রা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছতে পারে যেখানে কোনভাবেই আর মানিয়ে নিতে পারবে না মানুষ।পাশাপাশি তীব্র খড়া পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা করা হয়েছে। দু’ মাস আগে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও আন্তর্জাতিক রেডক্রস সোসাইটির যৌথ রিপোর্টেও উষ্ণায়নের কারণে দক্ষিণ এশিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তাপ প্রবাহের আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল হর্ন অফ আফ্রিকা তথা আফ্রিকার মূল মহাদেশীয় ভূ- খণ্ডের পূর্বতম অঞ্চল, সাহিল অঞ্চল যা উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়াকে নিয়ে গঠিত, এছাড়া দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়ায় তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি। এবার দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ ভারতকে নিয়ে আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।
বুধবারই ভূজে তাপমাত্রা ছিল ৪১.৬ ডিগ্রি। রাজকোটে পারদ চড়েছিল ৪১.৫ ডিগ্রি। উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলির তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে এখনই। এমনকি পার্বত্য অঞ্চলগুলিতেও স্বস্তি নেই। সেখানেও তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রির বেশি।
মৌসম ভবন পূর্বাভাস দিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লু বইবে রাজস্থান, কর্ণাটক, গুজরাটে। ফলে ওই সময় মানুষ যেন বাড়ি থেকে না বেরোয়। তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি উত্তর কর্ণাটক, গুজরাট সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থানে।
আজ থেকে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে হাওয়া অফিস। আগামী ৪৮ ঘন্টায় পরিস্থিতি আরো ভয়ানক হতে পারে। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন বেড়েছে। জলবায়ু বদলের এটাই কারণ। এমন দাবদাহের জন্য দায়ী যথেষ্ট দূষণ, গাছ কেটে ফেলা এবং অত্যধিক তেজস্ক্রিয় বিকিরণ। ছয়টি ঋতু উধাও হয়ে গেছে ঋতুচক্র থেকে। গত বছর থেকেই দাপট দেখিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উষ্ণ জলস্রোত এল নিনো। এবছর এল নিনোর ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তাপমাত্রা বাড়বে দুরন্ত গতিতে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এবছর লা নিনার ফিরে আসার সম্ভাবনাও রয়েছে। এল নিনোর ঠিক বিপরীত হলো লা নিনা। গভীর সমুদ্র থেকে উঠে আসা ঠান্ডা জলস্রোত। লা নিনা এলে ভারতের বর্ষার মরসুম ওলোট পালোট হয়ে যাবে। অতি বৃষ্টিতে ভাসবে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য।