আমাদের ভারত, ১১ ডিসেম্বর:
ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী কোনও বিয়ের জন্য মেয়েদের ন্যূনতম বয়স হতে হয় ১৮ বছর। কিন্তু মুসলিম ব্যক্তিগত আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের কোনও সীমা বেঁধে দেওয়া নেই
এই মর্মে শীর্ষ আদালতের কাছে এটি আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। আবেদনে জানানো হয়েছে, কোনওরকম ব্যক্তিগত আইন ও ধর্মনির্বিশেষে মহিলাদের বিয়ের একটি সর্বনিম্ন বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া হোক। জাতীয় মহিলা কমিশনের এই আবেদনের ভিত্তিতে শুক্রবার এই বিষয়ে কেন্দ্রের মতামত জানতে চাইল দেশের শীর্ষ আদালত।
অন্যান্য ব্যক্তিগত আইন দণ্ডবিধি অনুযায়ী একজন মহিলার ক্ষেত্রে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর ও পুরুষের ২১ বছর। কিন্তু মুসলিম ব্যক্তিগত আইন অনুযায়ী কোনও ব্যক্তি বা মহিলা বয়সন্ধিকালে পৌঁছলেই অর্থাৎ ১৫ বছরই তাদের বিয়ের অনুমতি দেওয়া হয়। এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। দেশে প্রচলিত অন্যান্য ব্যক্তিগত আইন দণ্ডবিধি অনুযায়ী বিয়ের জন্য মহিলাদের সর্বনিম্ন বয়স মেনে চলা হয়। শুধুমাত্র ব্যতিক্রম মুসলিম ব্যক্তিগত আইনের ক্ষেত্রেই।
তাই মুসলিম ব্যক্তিগত আইনে বিয়ের বয়স বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশন সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ কেন্দ্রকে নোটিশ পাঠিয়েছে, এ বিষয়ে কেন্দ্রের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।
জাতীয় মহিলা কমিশনের আবেদন যেকোনো সম্প্রদায় ও ধর্ম নির্বিশেষে মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর করা হোক। কমিশনের আবেদন দন্ডবিধির সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স মুসলিম মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়া উচিত। কমিশনের মতে এটি যে কেবল অযৌক্তিক তাই নয় বৈষম্যমূলকও বটে। একই সঙ্গে এটি দণ্ডবিধির আরও একটি বিধানকেও লংঘন করে। মুসলিম ব্যক্তিগত আইনে বয়সন্ধিকালে পৌঁছালে মেয়েদের বিয়ে হলে তা ভারতে প্রচলিত কিছু আইনের বিরোধিতা করে, যেমন পক্স আইন। যা ১৮ বছরের নিচে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীদের কোনোরকম যৌন হেনস্থা থেকে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। ভারতীয় দণ্ডবিধিতে ধর্ষণের সংজ্ঞা বলে ১৮ বছরের নিচে কোন কিশোরীর সঙ্গে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হলে সেখানে কিশোরী সম্মতিতে বিবেচনা করা হবে না। সেই যৌন মিলনকে ধর্ষণ বলেই ধরে নেওয়া হবে। এদিকে বাল্যবিবাহ বিরোধী আইন ২০০৬ অনুযায়ী ২১ বছরের নিচে কোন ব্যক্তি ও ১৮ বছরের নিচে কোন কিশোরের বিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।