আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৯ আগস্ট: নিয়ম রক্ষার কথা যিনি বলেন সেই পুলিশ সুপারই যদি নিয়ম ভাঙেন তাঁকে শাস্তি দেবে কে? কৌশিকী অমাবস্যায় এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন সাধারণ মানুষ। সরাসরি প্রতিবাদ করার সাহস কেউ না দেখালেও সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
করোনা ভাইরাসের কারনে ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ করা হয়েছিল তারাপীঠ মন্দির। তিন মাস বন্ধ থাকার পর রথযাত্রার দিন মন্দির খোলা হয়। সে সময় মন্দির কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় সেবাইত ছাড়া মন্দিরের গর্ভগৃহে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এমনকি কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও মন্দিরের বাইরে থেকে মা তারার দর্শন করেন। সেই নিয়মই চলে আসছে। এরপরেই ১৩ জুলাই রামপুরহাট মহকুমা শাসকের সভাকক্ষে একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় কৌষিকী অমাবস্যায় সেবাইত ছাড়া কাউকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আশিসবাবু জানিয়েছিলেন, “১২ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত মন্দিরে কোনও ভিআইপি এমনকি ভিভিআইপি’দেরও প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না”।
তবে প্রশাসনের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গতকাল কৌশিকী অমাবস্যায় বেশ কিছু পুন্যার্থী মন্দির পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন। আর সন্ধের দিকে হলুদ পাঞ্জাবী ও সাদা পাজামা পড়ে মন্দিরে পৌঁছে যান জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ। মন্দির চত্বরে যজ্ঞে অংশগ্রহণ করেন। এরপর মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকে মাক্স ছাড়াই মা তারার পুজো দেন।
সেবাইতদের মাধ্যমেই সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। গর্ভগৃহে প্রবেশে যখন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেই সময় জেলা পুলিশ সুপার কীভাবে ভিতরে ঢুকে পুজো দিলেন?
এ বিষয়ে মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “কৌষিকী অমাবস্যার কারনে আট দিন মন্দিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনকে। ফলে কারা মন্দিরে ঢুকবে কারা ঢুকবে না তা প্রশাসন ঠিক করবে। আমরা কাউকে ঢুকতে বলিনি। কাউকে ঢোকাইনি।” আশিসবাবু বলেন, “উনি নিজের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মন্দিরের ভিতরে ঢুকতেই পারেন। এতে বিতর্কের কিছু নেই।” পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, “আমি দায়িত্ব পালন করার জন্য মন্দিরে ছিলাম। তারাপীঠ তো জেলার বাইরে নয়। ফলে আমি থাকতেই পারি।”