রাজেন রায়, কলকাতা, ৩১ অক্টোবর: এর আগে পূর্ব রেলের তরফে রাজ্যে লোকাল ট্রেন চালু করতে চেয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। কিন্তু উৎসবের মরসুমে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি রাজ্য। কিন্তু দুর্গাপূজা কাটতেই এবার রাজ্যের তরফেই সম্মতি জানিয়ে চিঠি পাঠানো হল রেল মন্ত্রককে। তবে তার আগে এই নিয়ে গাইডলাইন তৈরিতে রেলের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চায় রাজ্য।
সূত্রের খবর, অতিরিক্ত মুখ্য সচিব এইচ কে দ্বিবেদী এই চিঠি পাঠিয়েছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সুনীত শর্মাকে। তাতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লোকাল ট্রেন চালাতে কোনও আপত্তি নেই। দীর্ঘদিন ধরে স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চালানোর কারণে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। সঠিক স্বাস্থ্যবিধির আয়োজন করে লোকাল ট্রেন চালু করা যেতেই পারে। তা বৈঠকে বসে ঠিক করা হোক।
প্রসঙ্গত, করোনা লকডাউনের জেরে আট মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজ্যে বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। ধীরে ধীরে সবকিছু খুললেও লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু না-হওয়ায় জনমনে বিক্ষোভ বাড়ছে। রেলকর্মীদের জন্য সারাদিনে গুটিকতক ‘স্পেশাল ট্রেন’ চলে। রুটিরুজির ধান্দায় নিরুপায় হয়ে তাতেই উঠে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর, হুগলির পান্ডুয়া-সহ বেশ কয়েক’টি স্টেশনে ট্রেনের নিত্যযাত্রীরা ইতিমধ্যে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। বিজেপির তরফেও লোকল ট্রেন পরিষেবা চালুর আর্জি জানানো হয়েছে। গত মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, লোকাল ট্রেন চালু হলে আপত্তি নেই। যদিও রেলের তরফে তখন জানানো হয়েছিল, রাজ্য আগে তাদের চিঠি দিক। এর প্রেক্ষিতে রাজ্যের তত্কালীন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে একটি চিঠিও দেন। তার ভিত্তিতে শুরু হয় রেল ও রাজ্যের মধ্যে আলোচনা। লোকাল ট্রেন না চললেও আলোচনার প্রেক্ষিতে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে মেট্রোরেল পরিষেবা চালু হয়ে যায়। এবার লোকাল ট্রেনের জন্যও বৈঠকে বসার ইচ্ছাপ্রকাশ করল রাজ্য প্রশাসন।
মেট্রোতে যেমন ভিড় হয় তার চেয়ে অনেক বেশি ভিড় হয় লোকাল ট্রেনে। শহর ও শহরতলির স্টেশনে ঢোকা-বেরোনোর জন্য একাধিক গেট রয়েছে। ফলে কোভিড প্রোটোকল মেনে যাত্রী নিয়ন্ত্রণ করা একটি কঠিন কাজ। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে রেল-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে কি ব্যবস্থা নেয়, সেটাই দেখার অপেক্ষায় সাধারণ মানুষ।