আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ২৬ অক্টোবর: টাকিতে দুই বাংলার প্রতিমা বিসর্জন দেখতে এসে হতাশ হলেন পর্যটকরা। চিরাচরিত প্রথা মেনে এদিনও টাকির ইছামতি নবীতে প্রতিমা বিসর্জন হয়। কিন্তু বিসর্জনের সেই জৌলুস বা উন্মাদনা ছিল না। দূর-দূরান্ত থেকে যারা এসেছিলেন তারা শেষপর্যন্ত হতাশ হয়ে ফিরেছেন।
ইছামতি নদীতে বাংলাদেশ এবং ভারতের প্রতিমা বিসর্জন দেখতে এবারও বহু মানুষ এসেছিলেন। কলকাতা থেকেও অনেক এসেছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে এই ঐতিহ্যশালী বিসর্জন দেখতে এসেছিলেন বহু মানুষ। কিন্তু তাদের অনেকেই হতাশ হয়েছেন। আগেই ভারত-বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠকে ঠিক হয়েছিল যে এবার বেশি প্রতিমা নৌকায় করে বিসর্জন দেওয়া যাবে না। সেইমতো অধিকাংশ বারোয়ারি পুজোর প্রতিমা পাড় থেকে বিসর্জন দেওয়া হয়। কয়েকটি প্রতিমা নৌকায় তুলে ঘোরানো হয়। এছাড়া, প্রত্যেক বছর দর্শকরাও নৌকায় চড়ে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে পারেন। এবার তাতেও নিষেধাজ্ঞা ছিল। ফলে বহু মানুষ হতাশ হয়েছেন।
করোনার কারণে কয়েক শতকের ঐতিহ্যের টাকির ইছামতীতে বিসর্জন এবার বন্ধ না হয়ে যায় সেই জন্য গত সপ্তাহে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন, বিডিও এবং বসিরহাট জেলা পুলিশের তরফে দীর্ঘ বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় টাকিতে বিসর্জন হবে , তবে বেশ কিছু নিয়ম বিধি বেধে দেওয়া হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কেউ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট লংঘন করবে না। বাংলাদেশের মানুষ সে দেশের সীমানার মধ্যেই থাকবে আর ভারতীয় সীমানা পর্যন্ত থাকবে এদেশের পুজো আয়োজক বা উৎসাহী জনতা। ইছামতীর মাঝ বরাবর কড়া নজরদারিতে থাকবেন দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
অল্প কিছু সংখ্যা প্রতিমার নৌকা নামবে, কিন্তু কোনও দর্শনার্থীদের নৌকা নদীতে নামবে না। এছাড়া ৫ থেকে ১০ জনের বেশি নৌকায় উঠতে পারবে না। নদীর পাড়ে যারা বিসর্জন দেখতে আসবেন তারা সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে ইছামতি নদীর ভাসান দেখতে পারবে। জমায়েত করা যাবে না। সেটা একেবারে হাইকোর্ট নির্দেশ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
ফলে দূর-দূরান্ত থেকে যাঁরা এসেছিলেন তাদের অনেকেই হতাশা নিয়ে ফিরে গেলেন। তবে, কিছু মানুষের বক্তব্য একটু হলেও টাকিতে পৌঁছাতে পেরেছি এটাই ভালো। এদিন টাকিতে আসা দর্শনার্থীদের অনেকেই মাস্ক পড়ে ছিলেন না। বিসর্জনের অনুষ্ঠানে গা ভাসাতে গিয়ে অনেকেই নিজেদের দূরত্ব বজায় রাখেননি। এমনিতেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে, সেখানে নিয়ম না মানা মানুষের কারণে গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে না তো, উঠছে সেই প্রশ্ন।