পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১১ ডিসেম্বর: হাজারো নিরাপত্তা, হাজারো সিসিটিভি। কিন্তু সে সবকে ধুলো দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আঙুল তুলে পরীক্ষাকেন্দ্রে অনায়াসেই ঢুকে পড়লো স্মার্টফোন। চলল পরীক্ষাও। যা দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে গেলেন অনান্য পরীক্ষার্থীরা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারি ব্লকের দৌলতপুর হাইস্কুলের। যদিও পরীক্ষা শেষ হবার মাত্র ১৫ মিনিট আগে স্মার্টফোনটি দেখে ফেলেন রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। হাতেনাতে ধরে ফেলা হয় ওই যুবককেও। ঘটনার পরেই এলাকায় পৌছে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে বংশীহারী থানার পুলিশ।
এদিকে এই ঘটনা জানিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকও লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি করবার দায়িত্বে থাকা এজেন্সির ভূমিকা নিয়ে।
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার টেট পরীক্ষায় এই জেলার ২০ হাজার ছাত্র ছাত্রীর জন্য প্রশাসন ৪৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবার ব্যবস্থা করেছিল। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের বালাপুরের যুবক কাইসার আলীর পরীক্ষার সিট পড়েছিল বংশীহারী থানার দৌলতপুর হাইস্কুলে। প্রশাসন সুত্রে আরো জানা গিয়েছে, এবছর টেট পরীক্ষা দেবার জন্য সময় নির্ধারন করা হয়েছিল ১২/১৫ মিনিট থেকে ২টা ৩০মিনিট পর্যন্ত। পরীক্ষাথীদের বেলা ১১টার মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করানোর নিয়ম ছিল। যারা তাঁর পরে সেখানে গিয়েছে তাঁদের আর পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নির্দেশ অনুযায়ী বিশেষভাবে চেকিং, যেমন মেটাল ডিটেক্টর ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করানোর নিয়ম ছিল। এমনকি পুরুষ ও মহিলা পরীক্ষার্থীদের হাতের সোনা ও রুপোর আংটি, মোবাইল ফোন, মটোর বাইকের চাবি, জুতোর মধ্যে থাকা মোজা পর্যন্ত খুলে পরীক্ষাথীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করানো হয়।
অভিযোগ, কঠোর নিরাপত্তা ভেদ করেই স্মার্ট ফোন নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে তপন থানার বালাপুরের ওই পরীক্ষার্থী কাইসার আলী। রীতিমত প্রশাসনের চোখে ধুলে দিয়ে স্মার্ট ফোন নিয়ে অনাসেই সে ঢুকে পড়ে বংশীহারী থানার দৌলতপুর হাইস্কুলের ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে। প্রশ্ন উঠেছে এত নিরাপত্তা থাকা সত্বেও কি করে ওই পরীক্ষার্থী স্মার্টফোন নিয়ে অনায়াসে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করল? তাহলে কি মেটাল ডিটেক্টর শুধুমাত্র দেখানোর জন্যেই ছিল? নাকি সরষের মধ্যেই ভূত? এই ঘটনা নিয়ে এমন একাধিক প্রশ্ন উঠেছে।
সুত্রের খবর অনুযায়ী ওই যুবক মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমেই উত্তরপত্র পেয়েছিল। যা পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা এক শিক্ষিকা পরীক্ষা শেষ হবার মাত্র ১৫মিনিট আগে বিষয়টি লক্ষ্য করে তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়েছেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌমেন্দ্র নাথ রায় জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয় জানিয়ে ওই পরীক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
যদিও বংশীহারি থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।