আমাদের ভারত, ১৯ ডিসেম্বর: দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়ার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখলেন ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডার প্রধান লেফটেন্যান্ট ইন জেনারেল আর সি তিওয়ারি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন একাধিক শীর্ষ সেনা আধিকারিক। সীমান্তে নজরদারি অপারেশনাল প্রস্তুতি এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন তাঁরা। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এই সম্পর্ক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
সেনা সূত্রে খবর, বেলোনিয়া সীমান্তে নজরদারি ব্যবস্থা, সেনা মোতায়েন এবং আপদকালীন প্রতিক্রিয়ার প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করেন সেনাকর্তারা। সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও সেনার তরফে জানানো হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতির মোকাবিলায় বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের এই সফরের মাধ্যমে।
বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনের আগে যে আঞ্চলিক উত্তেজনা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা নিয়েও আলোচনা করেছেন সেনা কর্তারা। বাংলাদেশে বর্তমানে রীতিমতো বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে। ছাত্র নেতা হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তুঙ্গে। ঢাকায় একটি মসজিদ থেকে বেরনোর সময় মুখোশধারী বন্দুকবাজদের হামলায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। শুক্রবার তার দেহ আনা হয় ঢাকায়।
হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় হিংসা শুরু হয়ে যায়। একাধিক জায়গায় ভাঙ্গচুর চালানো হয়েছে। অভিযোগ, ভারতের প্রতি পক্ষপাতের দাবি করে কিছু সংবাদ মাধ্যমের দপ্তরেও হামলা করা হয়েছে। এক হিন্দু যুবককে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। ফলে সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে বিএসএফ।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রিত। বিক্ষোভকারীদের দাবি, হাদির হত্যার সঙ্গে যুক্তরা ভারতে রয়েছে। যদিও এই অভিযোগের কোনো সারবত্তা প্রমাণিত হয়নি।
এই সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ইস্টার্ন কমান্ড প্রধানের সীমান্ত সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। এটি শুধুমাত্র একটি রুটিন পরিদর্শন ছিল না। এটি বরং সীমান্তে প্রস্তুতি যাচাই ও পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখার স্পষ্ট বার্তা ছিল। আর সীমান্তে যাতে কোনো ধরনের অস্থিরতা বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেদিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে ভারতীয় সেনা।

