আমাদের ভারত, কলকাতা, ৪ মার্চ: দৃষ্টিহীন তপন দে এবং তার পরিবারের পাঁচ সদস্যের পাশে দাঁড়ালো সিংহবাহিনী। তাদের হাতে তুলে দিল প্রায় এক মাসের খাদ্য সামগ্রী। আজ কলকাতার শোভাবাজারে সিংহবাহিনীর পক্ষ থেকে সব জিনিসপত্র তুলে দেওয়া হয় তপনবাবুর হাতে।
শোভাবাজার শশী শূর লেনের বাসিন্দা তপন দে শিয়ালদায় ট্রেনে লজেন্স বিক্রি করতেন। কিন্তু লকডাউনের ফলে তাঁর রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। তার চার মেয়ে, তারা কেউ মিশনের স্কুলের এবং কেউ হোস্টেলে থেকে পড়াশুনা করে। লকডাউন এর ফলে মিশন এবং হোস্টেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারাও বাড়িতে চলে এসেছে। এই অবস্থায় প্রায় না খেয়ে তাঁদের দিন চলছিল। তপনবাবু জানান, কয়েকদিন না খেয়ে কাটাতে হয়েছে, তারপর থানার ওসি তাদের কিছু খাবার দিয়েছিলেন এবং পাড়ার লোকজনের দেওয়া সামান্য খাবার খেয়ে তাদের চলছে। তপনবাবুর স্ত্রীও দৃষ্টিহীন।
তাদের এই করুণ অবস্থার কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং তা জেনে সিংহবাহিনীর সভাপতি দেবদত্ত মাজি ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ান। আজ সিংহবাহিনীর কয়েকজন সদস্য তপনবাবুর বাড়িতে যান এবং তাঁদের প্রায় এক মাসের জিনিসপত্র দিয়ে আসেন। এর মধ্যে রয়েছে ৩০ কিলো চাল, ৫ কিলো আটা, চার কিলো তেল, তিন কেজি করে দু রকমের ডাল, রান্নার বিভিন্ন রকমের মসলা, ১০ প্যাকেট বিস্কুট, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, বিভিন্ন রকমের শাক সবজি থেকে শুরু করে মাজন যাবতীয় জিনিস যা দৈনন্দিন কাজে লাগে সবকিছুই তাদের দেওয়া হয়েছে বলে জানান দেবদত্ত মাজি।
তিনি জানিয়েছেন, লকডাউন এর পর থেকেই বিভিন্ন জেলায় তাদের কর্মীরা অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কোথাও কোথাও প্রতিদিন অসহায় মানুষের খাবার দেওয়া হচ্ছে, যেমন খড়দহে প্রতিদিন ১৫০ জনকে খাওয়ানো হচ্ছে। এছাড়া এখনো পর্যন্ত তারা ৬৫০ পরিবারকে সারা মাসের সাহায্য করেছেন। সাহায্যের মধ্যে রয়েছে- চাল, ডাল, নুন, চিনি, আলু ইত্যাদি। তিনি জানিয়েছেন, তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁরা এই কাজ করছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে যদি কেউ এগিয়ে এসে তাদের আর্থিক সাহায্য করেন তাহলে তারা আরও বেশি করে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবেন।