সুচপুরের ছায়া! হাত্যালীলা রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে

আমাদের ভারত, বীরভূম, ২২ মার্চ: ফের সুচপুরের ঘটনার ছায়া বীরভূমে। এবার রামপুরহাট থানার বগটুই গ্রামে। পোড়া বাড়ির ছাইয়ের গাদা থেকে উদ্ধার হল ১০ টি দলা পাকানো মৃতদেহ। তবে বেসরকারি সূত্রের খবর, মৃতের সংখ্যা ১২। মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ধন্দে জেলা পুলিশ সুপার থেকে ফিরহাদ হাকিমও।

সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ভাদু শেখকে। তার বদলা নিতেই রাত থেকে গ্রামে চলে বোমাবাজি। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি ঘরে। সেই আগুনেই জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০ জন মহিলার। যদিও গ্রাম সূত্রে দাবি, মৃত্যু হয়েছে আরও দুই শিশুর। গ্রামের বাসিন্দা আহত নাজিমা বিবি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, রাতের দিকে ভাদুর লোকজন গ্রামে বোমাবাজি করে। আমি প্রাণ বাঁচাতে বাড়ির ভিতর ঢুকে যাই। কিন্তু সেখানে ঢুকেও আমাকে মারধর করে। কয়েকজনকে বাড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তারা হয়তো আর বেছে নেই। একই কথা জানিয়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খুশি খাতুন। তিনিও বলেন, “দীর্ঘদিন থেকে ভাদুর পরিবারের সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্ব ছিল। সোমবার রাতে কে ভাদুকে খুন করেছে আমরা জানি না। কিন্তু ভাদুর মৃত্যুর পরেই গ্রামে বোমাবাজি করা হয়। এরপর আমাদের একটি বাড়িতে ঢুকিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আমি কোনোক্রমে পালিয়ে এসেছি। আমাদের সব আত্মীয় পুড়ে মারা গিয়েছে। পুলিশের সামনেই সব হয়েছে”।

ঘটনার পর এলাকায় আসেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধায়, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এলাকায় ঘুরে সাংবাদিক সম্মেলনে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কিভাবে আগুন লাগলো বলতে পারব না। একটি সিট গঠন করা হয়েছে। দেড় দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে। আমার কাছে খবর রয়েছে আট জন মারা গিয়েছে”।

বিরোধীদের সিবিআই তদন্তের দাবি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “সিবিআই অনেক তদন্ত করেও কোন রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি। আমাদের এখানে দক্ষ অফিসার রয়েছেন। তাঁরাই ঘটনার তদন্ত করে প্রকাশ্যে আনবে”।

বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “রাজ্যে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। এখনই রাজ্যে ৩৫৬ ধাড়া প্রয়োগ করা উচিত। মৃতের সংখ্যা নিয়ে কারচুপি করা হচ্ছে। আমার কাছে খবর আছে ১৫ জন মারা গিয়েছে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *