সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, বনগাঁ, ৮ এপ্রিল: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিলেও রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুলের বাজার বন্ধ করে দিল এলাকার বাসিন্দারা। চাষিরা খুলতে গেলে এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বুধবার ঘটনাটি ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর ফুল বাজারে। হাওড়ার ফুলের বাজার খুললেও বন্ধ রাখা হল ঠাকুরনগর ফুলের বাজার।
লকডাউনের ফলে ফুল চাষিদের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার নবান্নে ঘোষণা করেছিলেন, পান ও ফুল লকডাউনের বাইরে রাখার। বুধবার থেকে ফুল পান বাজার খোলা থাকবে। যেখানে চাষিরা ফুল বিক্রি করতে পারবেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগরে রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুল বাজার। যেখানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় ১০ হাজার ফুল চাষি জড়িত। ঠাকুরনগর ফুল বাজার থেকে ফুল কিনে ব্যবসায়ীরা কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যান। লকডাউনের ফলে বাজার বন্ধ থাকায় কৃষকদের জমিতে উৎপাদিত ফুল বিক্রি করতে পারছিলেন না। ইতি মধ্যেই অনেক কৃষক জমিতে গাছ কেটে নষ্ট করে দিয়েছেন। বুধবার থেকে ফুল বাজার খোলার কথা ঘোষণা করায় অনেক কৃষক, ফুল ব্যবসায়ী, আশায় বুক বেঁধে ছিলেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ বাধা দেওয়ায় ফুল বাজার খুলতে পারল না কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। বাজারে ফুল চাষিরা ঢুকতেই এলাকার বাসিন্দারদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তারপরই বন্ধ হয়ে যায় ফুলের বাজার। সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ সামাল দিতে ঠাকুরনগরে আসেন গাইঘাটা থানার পুলিশ। দুই পক্ষের মতামত শুনে ফুল বাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
সাধারণ মানুষের দাবি, ফুল বাজার খোলা থাকলে বাইরে থেকে ব্যবসায়ীরা আসবেন ফুল কিনতে, ফলে করোনা ভাইরাস তাদের মাধ্যমে ঠাকুরনগরে আসতে পারে। তাই বন্ধ করা হোক বাজার। ঠাকুরনগরবাসী ফুল বাজার বন্ধের দাবিতে ফুল বাজারের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাদের দাবি, গতকাল মুখ্যমন্ত্রী যে কথা বলেছেন সেইমতো ফুল বাজার খোলা হলে ঠাকুরনগরে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। কারণ হিসেবে তারা জানান, ঠাকুরনগরের একটা বৃহৎ অংশের মানুষ ফুল নিয়ে কলকাতায় বিক্রি করতে যায়। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে তারা ফুল বিক্রি করে। সেখান থেকে কেউ সংক্রমিত হলে সেই সংক্রমণ ঠাকুরনগরে ছড়ানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। এদিন সকালে তারা ফুল বাজার কমিটির কাছে বাজার বন্ধ রাখার আর্জি জানান। ফলে ফুল বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ফুলবাজার কমিটি।
ফলে ক্ষতির মুখে পড়েন ফুলচাষিরা। তারা জানান, গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ টিভিতে দেখার পরে ফুল তুলেছিলাম। এখন বাজারে এসে দেখি বাজার বন্ধ।