স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ২৪ জুলাই: “যাহারা শুধুমাত্র লাইনে দাঁড়াবেন তাহাদেরকেই ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে, কোনও ইট, পাথর বা চিহ্ন দিয়ে দিলে তাহাদেরকে গ্রহন করা হইবে না” –ভ্যাকসিন নিতে এসে দাসপাড়া/ লালবাজার পুলিশের এমনই লিখিত নির্দেশে আগের দিন বিকেল বা সন্ধ্যা থেকেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রাত জেগে ভ্যাকসিনের জন্য লাইনে দাঁড়াচ্ছেন গ্রামের মানুষ। সন্ধ্যার মধ্যেই খাওয়া দাওয়া করে বিছানাপত্র মশারি নিয়ে সটান চলে আসছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কেউ বা রাত জেগে আবার কেউবা কিচ্ছুক্ষন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বারান্দাতেই ঘুমিয়ে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন।
ভ্যাকসিনের সরবরাহ কম অথচ চাহিদা তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন নিয়ে গোটা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় গন্ডগোল ঝামেলা পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তির ঘটনা প্রতদিনই ঘটে চলেছে। সেই ঘটনা থেকে বাদ নেই উত্তর দিনাজপুর জেলাও। দুপুরের চড়া রোদ ভিড় ও অশান্তি এড়াতে চোপড়া ব্লকের দাসপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য সাধারন মানুষ টিকাকরণ কেন্দ্রের সামনে আগের দিন লাইন দিয়ে একের পর এক ইট বা পাথর দিয়ে নাম চিহ্নিত করে বাড়ি চলে যেতেন। পরদিন সকালে এসে দেখা যেত কারও ইট বা পাথর নেই এনিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হত। স্থানীয় দাসপাড়া লালবাজার পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশকে সেই ঝামেলা ও গন্ডগোল সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। এরপরই দাসপাড়া/লালবাজার পুলিশের পক্ষ থেকে দাসপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে দেওয়া হয়। যাতে উল্লেখ করা হয় কোনও পাথর বা ইট দিয়ে লাইন রাখা যাবে না। শুধুমাত্র যারা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকবেন তাদেরই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
পুলিশের এই নিদানের পরেই দাসপাড়া লালবাজার গ্রামের বাসিন্দারা আগের দিন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে চলে এসে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রাত কাটিয়ে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। অনেকেই আবার বাড়ি থেকে বিছানা মশারি নিয়ে এসে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বারান্দায় পালা করে ঘুমিয়ে নিচ্ছেন। যে যখন আসছেন তিনি ইট বা অন্যকিছু দিয়ে লাইন চিহ্নিত করে রাখছেন। তারপর ভোর থেকে নিজের ইট সরিয়ে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। বেলা দশটা থেকে শুরু হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের টিকাকরন। ফলে নিজেদের বা পরিবারের কারও টিকা নেওয়ার জন্য আগের দিন রাত থেকেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রাত জাগছেন চোপড়া ব্লকের দাসপাড়া লালবাজার গ্রামের বাসিন্দারা।