আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ১১ মে: রাজ্যের সর্বস্তরের গ্রন্থাগারিকদের নিয়ে তৈরি সম্মিলিত গ্রন্থাগার ও পেশাজীবী মঞ্চ এর উদ্যোগ এই ‘বইয়ের সঙ্গে বাড়িতে থাকুন ‘। বইপ্রেমী মানুষের চাহিদার ভিত্তিতে বিনামূল্যে ই–বই, জার্নাল প্রভৃতি সরবরাহ করা হচ্ছে গত একমাস ধরে।
এই মঞ্চের রাজ্যস্তরের আহ্বায়ক এবং পুরুলিয়ার সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক প্রণব হাজরা জানালেন, আজ পর্যন্ত তাঁরা ১৫ হাজার ৬০০ মানুষকে এই পরিসেবা দিয়েছেন। এঁরা আবার গ্রুপ করে এইসব ই রিসোর্স আরও অনেককে ফরোয়ার্ড করছেন।
এইরকমই একটি গ্রুপ তৈরি করেছেন তামিলনাড়ুর প্রবাসী বাঙালি পশ্চিম মেদিনীপুরের কার্তিক চৌধুরী। পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে তিনি এই গ্রুপ বানিয়েছেন।
উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর কলেজের লাইব্রেরিয়ান অরবিন্দ মাজি দেশের অন্য রাজ্যে থাকা বাঙালিদের নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করে এই পরিসেবার সুযোগ পৌঁছে দিচ্ছেন। এইরকম গ্রুপ তৈরি করেছেন, বাঁকুড়ার শুভদীপ মুখার্জি।
পুরুলিয়ার সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং একটি টেলিগ্রাম গ্রুপ করা হয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানের ছাত্র দীপ কুমার কীর্তনিয়া এই গ্রুপের দায়িত্বে আছেন। এখনও পর্যন্ত ৫০০ পড়ুয়া ও শিক্ষক ওই গ্রুপে নিজেদের যুক্ত করে অনলাইন গ্রন্থাগার পরিসেবা নিচ্ছেন।
ডঃ বিশ্বজিৎ দাস, গ্রন্থাগারিক, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, ডঃ পূরবী সেন, গ্রন্থাগারিক, বিবেকানন্দ কলেজ, ঠাকুর পুকুর, শুভাশিস কারক, গ্রন্থাগারিক, পাঁচমূড়া কলেজ, বাঁকুড়া, রবি শঙ্কর চক্রবর্তী, গ্রন্থাগারিক, চেলেয়ামা পাবলিক লাইব্রেরি, পুরুলিয়া এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানের ছাত্র এবং কলকাতার আই সি এফ এ বিজনেস স্কুলের গ্রন্থাগার সহকারী তিমির কান্তি হাজরাদের নিয়ে এই টিম এই বিশাল কর্মযজ্ঞটি চালিয়ে যাচ্ছেন এক সুদক্ষ টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে।
প্রণব বাবু জানালেন, এই পরিসেবা দিতে গিয়ে তাঁরা ডিজিটাল ডিভাইসকে ভালো রকম অনুভব করছেন। তাই তাঁরা ঠিক করেছেন, দুস্থ পড়ুয়ারা জানালে তাঁরা তাদের নেট প্যাক রিচার্জ করে দেবার ব্যবস্থা করবেন। তিনি বলেন, তাঁরা মনে করেন, এখন ঘরে নিজেকে বন্দি রাখা মানেই দেশের জন্য এক বিরাট স্বার্থ ত্যাগ করা। আর সেই বন্দিজীবনকে তুলনামূলক ভাবে সুখকর রাখতেই আমরা এই বই পৌঁছে দিচ্ছি তাঁদের কাছে। কারণ আমরা মনে করি মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু বই এবং করোনা এইভাবেই আমাদের হারিয়ে যাওয়া পাঠাভ্যাসকে ফিরিয়ে দেবে এই বিশ্বাস নিয়েও এই উদ্যোগ।
শুধু শিক্ষক ছাত্র ছাত্রীরাই নন, অনেক প্রবীণ, গৃহবধূ, আইপিএস, ডাব্লুই বি সি এস অফিসাররাও এই অনলাইন লাইব্রেরির সুযোগ পেয়ে খুশি।