বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন বারুইপুরে, তদন্তে পুলিশ

আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ১০ আগস্ট:
বছর তিয়াত্তরের এক বৃদ্ধাকে হাত পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুরে। তাঁর ঘর থেকে গয়না ও দামি জিনিষপত্র লুট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। নিহতের নাম সুষমা চট্টোপাধ্যায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুর থানার পদ্মপুকুরের সালেপুর এলাকায়।

ঘরের বিছানা লন্ডভন্ড, গয়নার বাক্স খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তার পাশেই মুখে কাপড় বাঁধা অবস্থায় পড়ে বৃদ্ধার দেহ। দুটি ঘরের ৫টি আলমারি ভাঙ্গা। ঘরের মেঝেতে পড়ে জামাকাপড়, কাগজপত্র। উঠানে সুটকেশ পড়ে। বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ জিনিষপত্র। মৃতার নাম সুষমা চ্যাটার্জি (৮০)। ঘটনার খবর পেয়েই সোমবার সকালে বারুইপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। প্রাথমিক ভাবে দেখে পুলিশের মনে হয় খুন করা হয়েছে ঐ বৃদ্ধাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এসডিপিও বারুইপুর অভিষেক মজুমদার ও বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসুও ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।

তবে বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর পেয়ে এলাকার মানুষজন ঘটনাস্থলে ভিড় জমান। কি কারণে ঐ বৃদ্ধাকে খুন করা হল এবং এই খুনের পিছনে কে বা কারা জড়িত রয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বেশ কিছু গয়না ও জমির দলিল খোয়া গিয়েছে। তাই প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সম্পত্তি ঘটিত কারণে খুন হতে পারে। তবে এর পিছনে দুই বা তার বেশি লোকজন আছে বলেই অনুমান পুলিশের। পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিত বসু বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই মৃত্যুর আসল কারন জানা যাবে। প্রাথমিক অনুমান, বৃদ্ধাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে”।

বারুইপুর-কুলপি রোডের পাশেই বৃদ্ধার অ্যাসবেস্টাস ছাউনির পাকা বাড়ি। বৃদ্ধার স্বামী ডিফেন্সে কাজ করতেন। অনেক বছর আগেই তিনি মারা গিয়েছেন। এক ছেলে আর তার স্ত্রী ২০১৬ তে ক্যান্সারে মারা যান। বৃদ্ধার বড় মেয়ে রাজলক্ষ্মী দে কলকাতার বেলেঘাটায় থাকেন। ছোট মেয়ে বহ্নিশিখা নস্কর জুলপিয়াতে থাকেন। এদিন সকাল ১০টা নাগাদ বৃদ্ধার বাড়ির পরিচারিকা নুরজাহান বিবি কাজ করতে এসে দেখেন বাড়ির বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সুটকেশ পড়ে আছে। কোনওটি খোলা কোনওটি বন্ধ। গ্রিলের দরজাও খোলা। এতে সন্দেহ হওয়ায় আশপাশের প্রতিবেশীদের তিনি ডাকেন। খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ এসে দেখে বিছানার উপর বৃদ্ধার দেহ পড়ে রয়েছে। গোটা ঘর লন্ডভন্ড করা। বৃদ্ধা যে ঘরে থাকতেন সেই ঘরে দুটি আলমারি খোলা অবস্থায়। পাশের ঘরে আরও তিনটে আলমারিও খোলা। তবে পুলিশের অনুমান, শুধুমাত্র সোনাদানার জন্য নয় এই খুনের পিছনে অন্য কারণ রয়েছে। সম্পত্তিগত কারণে পরিবারের কেউ খুন করতে পারে বলেও মনে করছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *