Muslim Law Board, Supreme Court, হিন্দুদের মতো মুসলিম মহিলাদের খোরপোষের সুপ্রিম নির্দেশে আপত্তি, শরিয়ত বিরোধী আইন বলে মামলার পথে মুসলিম ল’ বোর্ড

আমাদের ভারত, ১৪ জুলাই: হিন্দু মহিলাদের মতো খোরপোষের অধিকার রয়েছে মুসলিম মহিলাদেরও। এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি এমনই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এই নির্দেশে আপত্তি জানাল মুসলিম ল’ বোর্ড। এই নির্দেশের বিরোধিতা করে তারা মামলা দায়ের করবে বলে জানিয়ে দিল।

মুসলিম ল’ বোর্ডের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ শরিয়ত আইন বিরোধী। ফলে শরিয়ত বিরোধী নির্দেশ তারা মানতে পারবেন না। তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তারা মামলা দায়ের করবেন।

গত বুধবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশ আসার পর রবিবার দিল্লিতে এক বৈঠকে বসে মুসলিম ল’ বোর্ড। বৈঠক শেষে কমিটির তরফে জানানো হয়, শরিয়ত নিয়মের বিরুদ্ধে এই ধরনের নির্দেশ কখনোই সঠিক নয়। একজন মহিলাকে তালাক দেওয়া হলে তিনি কিভাবে খোরপোষ পেতে পারেন? এই বিষয়ে ল’ বোর্ডের বক্তব্য, ভারতের সংবিধান আমাদের অধিকার দিয়েছে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি ও বিশ্বাস অনুযায়ী বাঁচার। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত আমাদের সম্প্রদায়ের স্বার্থ বিরোধী। শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে আমাদের সম্প্রদায়ের বিয়ের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হবে। ল’ বোর্ডের তরফে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আদালতের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামবেন তারা।

গত ১০ জুলাই খোরপোষ সংক্রান্ত এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। এক মুসলিম ব্যক্তি ডিভোর্সের পর স্ত্রীকে খোরপোষ দিতে চাননি। পারিবারিক আদালত তাকে মাসিক খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ওই ব্যক্তি তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। উচ্চ আদালতও একই রায় দেয়। এরপর সে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন জমা করে। সেখানে ফৌজদারী আইনের ১২৫ ধারায় উল্লেখ করে বিচারপতিরা সেই আবেদন খারিজ করে দেন। আদালতের তরফে জানানো হয়, মুসলিম মহিলা আইন ১৯৮৬- এর ধর্মনিরপেক্ষ আইনের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে না। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি নাগারত্ন বলেন, আমরা ফৌজদারী আবেদন খারিজ করে দিচ্ছি। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্তে আসছি, যে ফৌজদারী আইনের ১২৫ ধারা সমস্ত মহিলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তিনি আরো বলেন, অনেকের স্বামীরা বুঝতেই পারেন না যে তাদের স্ত্রী যারা গৃহবধূ তাদের ওপর মানসিক দিক থেকে কতটা নির্ভরশীল। সময় এসেছে ভারতীয় পুরুষদের গৃহবধূদের ভূমিকা ও আত্মত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে এবারে প্রবল আপত্তি জানালো মুসলিম ল’ বোর্ড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *