রাজেন রায়, কলকাতা, ২৬ আগস্ট: তাহলে কি সবকিছু রাজ্য প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে? সম্প্রতি কিছুদিন আগে নবান্ন থেকে দাম নিয়ন্ত্রণের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু দাম নিয়ন্ত্রণ তো দূরের কথা, প্রত্যেকদিনই চড়চড় করে দাম বাড়ছে বাঙালির নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি আলু পেঁয়াজের। সবমিলিয়ে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় সাধারণ মানুষের।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে সরকার ২৫ টাকা কেজিপ্রতি আলুর দর বেঁধে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু আগস্টের শুরুতে জ্যোতি আলুর দাম ছিল ২৬ টাকা, যা এখন বেড়ে হয়েছে ৩২ টাকা। চন্দ্রমুখীর দাম ছিল ২৮ টাকা, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ টাকা। জুলাইতে জ্যোতি ও চন্দ্রমুখী আলুর দামের ফারাক ছিল ৬ টাকা। সেই ফারাক আগস্টে কমে এসেছে মাত্র ২ টাকায়। সূত্রের খবর, গত ৭২ ঘণ্টায় পোস্তা বাজারে বস্তা পিছু জ্যোতি আলুর দাম বেড়েছে ১৫০ টাকা। যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
আলুর এই মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে জোগান কমে যাওয়া। প্রথম দিকে বৃষ্টি না থাকলেও পরের দিকে বিপুল বৃষ্টির জেরে সবজির ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ রাজ্যের আলু রফতানি হয়ে গিয়েছে ওড়িশা, অন্ধ্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং অসমে। হুগলিতে আগামী বছরের জানুয়ারিতে
নতুন আলুর ফলন হলে তবেই দাম কমতে পারে বলে দাবি আলু ব্যবসায়ীদের।
অন্যদিকে, জোগান পর্যাপ্ত থাকলেও খুচরো বাজারে পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে অগ্নিমূল্যে। যদিও পাইকারী বাজারে দামে বদল ঘটেনি। কিন্তু সরকারি নিয়ন্ত্রণের অভাবে খুচরো বিক্রেতারা ইচ্ছামত দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
খুচরো বাজারে কোথাও পেঁয়াজের দাম ২৫ টাকা প্রতি কেজি তো আবার কোথাও ৩০ টাকা প্রতি কেজি। অনেক জায়গায় আবার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩৫ টাকায়। এদিন কোলে মার্কেটে নাসিকের পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি ৪০ কেজিতে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, মধ্যপ্রদেশের পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি ৪০ কেজিতে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। আর দক্ষিণ ভারত থেকে আসা পেঁয়াজ যা ম্যাড্রাসের পেঁয়াজ বা লাল পেঁয়াজ বলে পরিচিত তার দাম ছিল প্রতি ৪০ কেজির ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত এক সপ্তাহে ৪০ কেজিতে গড়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকা দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। আর রাজস্থানি পেয়াজ তো বাজারে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। যদিও এর পিছনে লকডাউন, পরিবহণ সমস্যা ও অতিবৃষ্টিকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

