আমাদের ভারত, ২১ অক্টোবর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে ১৭ জন জুনিয়র ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন। থ্রেট কালচারের সমূলে উৎপাটন, স্বাস্থ্য সচিবের পদত্যাগ, কলেজ লেভেল মনিটরিং কমিটিতে জুনিয়র ডাক্তারদের উপস্থিতির বিষয় সহ ১০ দফা দাবি নিয়ে আলোচনা হয়।
পাঁচটা থেকে বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই চারটে ২৯ এর মধ্যেই নবান্নে পৌঁছে যান জুনিয়ার ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল। সেখানে কলেজ লেভেল মনিটরিং কমিটিতে জুনিয়র ডাক্তারদের উপস্থিতির দাবি উঠেছে এই বৈঠকে। এই কমিটি সিলেক্টেড নয়, ইলেকটেড করার কথা বলা হয়েছে আন্দোলনকারীদের তরফে।
আর জি কর কান্ড প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতার পরিণতি বলে দাবি করা হয় ডাক্তারদের তরফে। এছাড়াও যাদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। স্টেট টাস্ক ফোর্সে ডাক্তারদের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। কলেজ নির্বাচনের উপর বারবার জোর দিয়েছেন আন্দোলনকারী ডাক্তারদের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
সোমবার নবান্নের বৈঠকে হুমকির সংস্কৃতির প্রসঙ্গ উঠলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ও অভিক দে’র বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন দেবাশীষ হালদার। কিন্তু তৎক্ষণাৎ তাকে থামিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দেবাশীষকে বলেন, তারা উপস্থিত নেই যখন নাম নেবেন না। নাম নিলে তো তাকেও তার কথা বলার জায়গা দিতে হবে।
অন্যদিকে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের উপস্থিতিতেই তাঁর অপসারণের দাবি করেন আন্দোলনকারী জুনিয়ার ডাক্তাররা। প্রায় সকলেই এই একটি বিষয়ের দাবি জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বাস্থ্য সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগের একাধিক নথিও তারা জমা দিয়েছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য সচিবকে অভিযুক্ত বলায় আপত্তি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন অভিযোগ সত্যি কিনা প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তাকে অভিযুক্ত বলা যায় না। কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে বলা হয় দোষ প্রমাণিত না হলে দোষী বলা যায় না, অভিযুক্ত বলা হয়। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযুক্ত শব্দটি মানতে রাজি নন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, স্বাস্থ্য সচিব পদ সরকারি, সেই কারণে এটা নিয়ে পরে আলোচনা করবেন এখানে তিনি এই নিয়ে কথা শুনতে চান না।
দ্বিতীয়তঃ, অভয়ার ঘটনা যাতে আর না হয় তার জন্য জুনিয়র ডাক্তারদের আবেদন। আর এই কথা উঠে আসছে অনিকেত মাহাতোর বক্তব্যে। তিনি বলেন, ছাত্রদের অভিযোগ জানানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গার প্রয়োজন। মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার পরিস্থিতি নেই। বিভিন্ন সময় একাধিক ঘটনা ঘটে। ছাত্রীদের সঙ্গে একাধিক খারাপ ঘটনা ঘটে কিন্তু তাদের কোথাও অভিযোগ জানানোর জায়গা নেই।
ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অধ্যক্ষের ঘরে তালা ঝোলানো হয়েছে সেই কথা এদিন বলেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। মেডিকেল কলেজগুলিতে সুস্থ পড়াশোনার জায়গা তৈরি করা, রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসকদের পারস্পরিক সম্পর্কের জায়গা উন্নতি করার দাবি জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে যেসব হাসপাতালে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সেই সব বিষয়ে তদন্ত করা হোক ও সব অভিযোগ সত্য কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন তারা।