স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ১৭ জুন: বর–নতুনবৌ সহ পরিবাবের সকলের মুখে ত্রিস্তরীয় মাস্ক, বিয়ের অনুষ্টানে ঢোকার আগে হাত, পা স্যানিটাইজেশন করা, ছাদনাতলার চারদিকে লাল রিবন দিয়ে আটকানো-করোনা আবহে এমনই অভিনব বিয়ের স্বাক্ষী হয়ে রইলো রায়গঞ্জের শহরবাসী।
মাস ছয়েক আগে রায়গঞ্জ শহরের বীরনগরের বাসিন্দা ত্রিজা দাসের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় উদয়পুরের দেবব্রত দেবনাথের। কিন্তু করোনা সংক্রমনের কারনে লকডাউন শুরু হওয়ায় ভেস্তে যায় পরিকল্পনা। সরকারী নিয়ম মেনে ২৫ জন নিয়ে যে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্ভব নয় তা বুঝতে পেরে দুই পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় মন্দিরেই হবে বিয়ের অনুষ্ঠান। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসেন রায়গঞ্জের একটি ক্যাটারার সংস্থার কর্ণধার সুজয় নন্দী। দুই পক্ষকেই সুজয়বাবু আশ্বস্ত করেন সরকারী নিয়ম মেনেই যাবতীয় বিয়ের অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে দেবেন তিনি। সেই মতো মঙ্গলবার রায়গঞ্জের একটি উৎসব ভবনে সামাজিক দূরত্ব ও সবধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সাতপাঁকে বাঁধা পড়লো ত্রিজা ও দেবব্রত।
ত্রিজা বলেন, “ভাবতেই পারিনি এভাবে বিয়ে করতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে এছাড়া কোনো উপায় ছিল না। তবে পাড়া প্রতিবেশী ও সব আত্মীয়দের নিমন্ত্রণ না করায় আক্ষেপ থেকে গেলো।” অন্যদিকে পাত্র দেবব্রত বলেন, “সারাক্ষন মাস্ক পরে আছি। ভাবিনি যে এইভাবে বিয়ে করবো। তবে সমস্ত নিয়ম মেনে বিয়ে হচ্ছে আমাদের। যাই হোক ঠিক আছে সব।” বিয়ের পুরোহিত প্রশান্ত ব্যানার্জি বলেন, “এভাবে বিয়ে দেওয়া জীবনে প্রথমবার। ছাদনাতলা পর্যন্ত আটকে দেওয়া হয়েছিল ভিড় নিয়ন্ত্রনের জন্য। তবে ক্যাটারার সংস্থার কর্নধার সুজয়বাবুর উদ্যোগেই গোটা বিবাহ পর্ব নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে।”
ক্যাটারার সুজয়বাবু বলেন, “মার্চ মাস থেকে আমাদের ব্যবসা বন্ধ। ক্যাটারিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বসে গিয়েছে। কীভাবে সংসার চালাবো? অনেক বুঝিয়ে এই কাজটা পেয়েছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একেকটা ভবনে দুশো জন লোকের ব্যবস্থা করা যায়। সরকার বা প্রশাসন আমাদের সমস্যার কথা না ভাবলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।