পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ ফেব্রুয়ারি: ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ের সেই মর্মান্তিক ঘটনা ঘিরে এক সময় তোলপাড় হয় গোটা রাজ্য। লালগড়ের নেতাই গ্রামে রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনী হার্মাদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। সেই মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণ যায় ২ জন মহিলা সহ ৯ জনের, আহত হন ২৮ জন। ঘটনার পর এলাকায় গিয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর কিছুদিন পরেই সরকারের পালাবদল ঘটে রাজ্যে। বামেদের হারিয়ে সরকারের চেয়ারে বসেছিল তৃণমূল।
দীর্ঘ প্রায় নয় বছর পর এবার জামিনে মুক্তি পেলেন নেতাই মামলার তিন মূল অভিযুক্ত। ফুল্লরা মণ্ডলের পর এবার জামিন পেলেন ঘটনার মূল অভিযুক্ত তথা তৎকালীন দাপুটে সিপিআইএম নেতা অনুজ পাণ্ডে, ডালিম পাণ্ডে ও তপন দে। ফুল্লরা, খলিল উদ্দিন সহ বেশ কয়েকজন মুক্তি পেলেও মুক্তি পাচ্ছিলেন না মূল অভিযুক্তরা। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন এই তিন মূল অভিযুক্ত। জামিনের পেপার মেদিনীপুরে এসে পৌঁছলেই মেদিনীপুর সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পাবেন ওই তিনজন বলে জানিয়েছিলেন অভিযুক্তদের আইনজীবী। সেইমতো আজ বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেলেন ডালিম পান্ডে ও তপন দে। জেলের বাইরে ফুলের মালা ও ফুলের তোড়া দিয়ে তাদের সম্বর্ধনা জানান তাদের অনুগামীরা।
এদিন জেল থেকে বেরিয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এই দুইজন। ডালিম পান্ডে জানান, “এখনো যে সকলে আমার সাথে আছে এটা দেখে খুব ভালো লাগছে। মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে এই ১২ বছর আমাদের জেলে রেখেছিলো আমরা আজকে বেড়িয়েছি। বাকিরাও সকলে ছাড়া পাবে, শুধু সময়ের অপেক্ষা।”
অপরদিকে তপন দে জানান, “কমিউনিস্ট পার্টি করতে গেলে জেল খাটতে হবে এটাই অভিজ্ঞতা। আমি এখনো দলের সৈনিক, দল যেভাবে নির্দেশ দেবে সেভাবেই কাজ করবো আগামী দিনে।”
কিছুদিন আগেই নেতাই গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন নেতাইয়ের কেউ আর লাল ঝান্ডা ধরবে না। এই প্রসঙ্গে তপন দে জানান, “শুভেন্দু কে? শুভেন্দু তো তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছে। চোরের দল সব, ওদের নিয়ে আবার কী মন্তব্য করব?”

