জে মাহাতো, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ১৬ জুলাই: ৪০ বছর ধরে বেদখল বাস্তু জমি মাত্র সাতদিনে মুক্ত করে গ্রামে গিয়ে সেই জমি আসল মালিকের হাতে তুলে দিলেন বিচারক। জমি ফিরে পেয়ে বৃদ্ধা গৌরী নায়েক সজল চোখে জানালেন, জন্মেও ভাবিনি জমি ফেরত পাব। এই ঘটনার সাক্ষী থাকল জামবনি ব্লকের ইটামারো গ্রামের বাসিন্দারা।
আদালত শুনলেই গ্রামের মানুষের মনে যে জড়তা কাজ করে সেটা ভাঙতেই আদালতকে দুয়ারে পৌঁছে দিয়ে সাধারণ মানুষের অধিকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব বিচারক সুনীল কুমার শর্মা। ইটামারো গ্রামের বাসিন্দা গৌরী নায়েক ও লুলু ওরফে অনিল বেরার বাড়ি পাশাপাশি। গত ৪০ বছর ধরে গৌরীর বাস্তু জমির কিছুটা অংশ দখল করে বেড়া দিয়েছিলেন লুলু। বার বার দখলে রাখা জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেও কোনও সুরাহা হয়নি গৌরী দেবীর। ইদানিং গৌরীর পাশের জমিতে লুলু বেরা সরকারি বাড়ি তৈরি করছিলেন।
এই সময় গৌরীদেবী বিনামূল্যে আইনি পরিষেবার কথা জানতে পারেন। তারপর তিনি জামবনি ব্লকের পার্শ্ব আইনি সহায়ক মোহিত বেজের মাধ্যমে উপস্থিত হন ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের দপ্তরে। ৮ জুলাই সমস্যার কথা লিখিত ভাবে গৌরীদেবী জানান, ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুনীল কুমার শর্মাকে। বৃদ্ধার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রি-লিটিগেশন মামলা রুজু করা হয়। এমনকি জামবনি ব্লকের বিএলআরও’র কাছে ওই জমি সংক্রান্ত রির্পোট তলব করেন বিচারক। ১৩ জুলাই রির্পোট পাওয়ার পর বিচারক সুনীলকুমার শর্মা গ্রামে গিয়ে দু’পক্ষকে ডেকে সমস্যার সমাধান করেন। জমি ফেরত পেয়ে খুশি বৃদ্ধা।
ঝাড়গ্রাম জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা বিচারক সুনীলকুমার শর্মা বলেন,‘গত ৪০ বছর ধরে জমি সংক্রান্ত সমস্যা ছিল দু’পক্ষের মধ্যে। ৩ ফুট চওড়া ৪০ ফুট লম্বা জায়গা দখল করে রেখেছিল। আজ দু’পক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হয়েছে। গৌরী নায়েকের জমি ফেরত দেওয়া হয়েছে।’