কুমারগঞ্জে কিশোরী খুনের ঘটনায় সরানো হল তদন্তকারী অফিসার সঞ্জয় মুখার্জিকে, দায়িত্বে আসলেন ডিএসপি বিনোদ ছেত্রী

আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ১৩ জানুয়ারি: কুমারগঞ্জে কিশোরী খুনের ঘটনায় জাতীয় তপশিলি জাতি আয়োগের কড়া নির্দেশের পরেই দফায় দফায় সরানো হল তদন্তকারী অফিসারদের। প্রথম থেকেই এই মামলায় দায়িত্বে থাকা কুমারগঞ্জ থানার ওসি সঞ্জয় মুখার্জিকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সার্কেল ইন্সপেক্টরকে। সোমবার তাকেও সরিয়ে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিএসপি ডিইবি বিনোদ ছেত্রীকে। প্রথম থেকে দায়িত্বে থাকা ওসি সঞ্জয় মুখার্জির বিরুদ্ধে একাধিক আইন বিরুদ্ধ কাজ নজরে আসতেই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এদিন মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয় সার্কেল ইন্সপেক্টর সুকুমার মিশ্রকে। এদিকে জাতি আয়োগের নির্দেশে এই মামলায় এসসি, এসটি ধারা ৩২৫ এবং ৩১ডাব্লু২ যুক্ত করার পরেই এদিন বিকেলে ফের তদন্তকারী অফিসারকে বদলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিএসপি (ডিইবি) বিনোদ ছেত্রীকে বলে পুলিশ সুত্রের খবর।

প্রায়একসপ্তাহ আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের সাফানগরের বেলখোর পাকুরতলা এলাকায় কালভার্টের নিচ থেকে নগ্ন অবস্থায় উদ্ধার হয় পুড়ে যাওয়া এক কিশোরীর মৃতদেহ। প্রকাশ্যে আসে গণধর্ষণের পর গলার নলি কেটে খুন করে পেট্রোল দিয়ে পোড়ানোর ঘটনা। যার পরেই প্রতিবাদের আগুন জ্বলে ওঠে জেলা জুড়ে। দোষীদের ফাঁসির সাজার দাবি জানিয়ে পথসভা বিক্ষোভ থেকে শুরু করে অবরোধ সবই চলে জেলায়। যার পর পুলিশ ঘটনার মূল অভিযুক্ত সহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করলেও প্রথমেই তাঁদের ছবি প্রকাশ্যে এনে বিতর্কে জড়ান কুমারগঞ্জ থানার ওসি সঞ্জয় মুখার্জি। যার পর অভিযুক্তদের থানায় জামাই আদর করে রাখারও অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। একই সাথে ঘটনার পুর্ননির্মাণের দিন থানার সামনে অভিযুক্তদের একজনকে লাঠিপেটা করেও বিপাকে পড়েন কুমারগঞ্জের ওসি। যেসব ঘটনা অভিযুক্তদের সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে তদন্তে প্রভাব ফেলতে পারে এমন আশঙ্কা করেই তদন্তকারী অফিসার থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রের খবর।

ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, খুন ও প্রমাণ লোপাটের জন্য ৩৭৬ডি, ৩০২ এবং ২০১ আইপিসি ধারায় মামলা রজু করে আদালতে পাঠানো হয়েছিল পুলিশের তরফে। যেখানে এসসি এসটি ধারা কেন যুক্ত করা হয়নি তা নিয়ে রবিবার জেলায় আসতেই জাতীয় তপশিলি জাতি আয়োগের প্রতিনিধি দলের প্রশ্নের মুখে পড়েন জেলা শাসক ও জেলা পুলিশ সুপার। জাতি আয়োগের কড়া নির্দেশের পরেই ওই মামলায় যুক্ত করা হয় এসসি এসটি ধারা। আর তার জেরেই সোমবার তদন্তকারী অফিসার সুকুমার মিশ্রকে সরিয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিএসপি (ডিইবি) বিনোদ ছেত্রীকে।

জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন, এসসি এসটি ধারা যুক্ত করার কারণেই এই মামলার দায়িত্ব ডিএসপি (ডিইবি)কে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যেই চার্জশিট দেওয়া হবে।

One thought on “কুমারগঞ্জে কিশোরী খুনের ঘটনায় সরানো হল তদন্তকারী অফিসার সঞ্জয় মুখার্জিকে, দায়িত্বে আসলেন ডিএসপি বিনোদ ছেত্রী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *