Phachami mining, ফের দেউচা-পাঁচামি কয়লা খনির কাজ বন্ধ করল আদিবাসীরা

আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, সিউড়ি, ৪ মার্চ: “নিজেদের ভিটেমাটি ছাড়ব না। কয়লা খনি করতে দেওয়া হবে না”। এই দাবিতে দেউচা-পাঁচামির খনন কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখালেন আদিবাসী মহিলারা। মূলত সাগরবাঁধি গ্রামের মহিলারা বিক্ষোভে সামিল হন। তাড়িয়ে দেওয়া হয় কর্মরত জেসিবি মেশিন চালক, ডাম্পার চালকদের। খবর পেয়ে এলাকায় যান জেলা শাসক বিধান রায়। তবে খবর লেখা পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। খনির সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের বের করে এলাকায় চড়কা কেটে সাধারণের যাতায়াত বন্ধ করে দেন বিক্ষোভরত আদিবাসী মহিলারা।

জানা গিয়েছে, দেউচ-পাঁচামিতে ৩৪০০ একর এলাকাজুড়ে কয়লা রয়েছে। এলাকার ২০টি গ্রাম ২১ হাজার মানুষ বসবাস করেন। প্রস্তাবিত কয়লাখনি এলাকায় বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল, জলাভূমি ও চরভূমি রয়েছে। মাটির নিচে ১২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত রয়েছে। এছাড়া ৬৭৫ মিলিয়ন টন ব্যাসল্ট শিলাস্তর রয়েছে। বাস্তবে রূপ পেলে এশিয়ার সর্ববৃহৎ কয়লাখনি হবে দেউচা পাচামি।

৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে দেউচা পাঁচামি কয়লা খনন কাজ শুরু কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো পরদিন ভূমি পুজো করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয় প্রশাসনকে। বাধা পেয়ে পিছু হঠে রাতের অন্ধকারে কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন। ৭ ফেব্রুয়ারি বিশাল পুলিশ বাহিনীর ঘেরাটোপে জেসিবি মেশিন দিয়ে মাটি কাটার কাজ শুরু হয়। অনিচ্ছুক গ্রাম গুলির মুখে মুখে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করে কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। মঙ্গলবার সাগরবাঁধি সহ চারটি গ্রামের আদিবাসী মহিলারা চাঁদা গ্রামের প্রজেক্ট এলাকায় গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। তারা বলেন, “কয়লা খনি করতে দেব না। কথা ছিল গাছ কাটা হবে না। কিন্তু তার পরেও গাছ কাটা হয়েছে। আর গাছ কাটতে দেব না। আমরা জন্মভূমি ছাড়ব না। আমরা সরকারি সুবিধা পায়নি। পেতেও চাই না। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ছেলেদের ভবিষ্যৎ কি? তাই আমাদের কয়লা চাই না। আমরা পাথর নিয়েই থাকতে চাই”।

যদিও মুখ্যমন্ত্রী জমিদাতাদের আর্থিক প্যাকেজ, চাকরি সহ একাধিক ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছেন। এক হাজারের বেশি ছেলেমেয়েদের চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে। আগামী দিনে আরও চাকরির প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কিন্তু তাতে চিরে ভেজেনি। তাই এদিন আন্দোলনে নামেন মহিলারা। তবে এনিয়ে প্রশাসনিক কেউ কিছু বলতে চায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *