আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৯ মে: ফের মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছিল বীরভূমের নলহাটিতে। চালক ও রেলের সেকশন ইঞ্জিনিয়ারের তৎপরতায় বেঁচে যান ২০ জন শ্রমিক। খবর পেয়ে জিআরপি তাদের উদ্ধার করে। বিডিও অফিস থেকে তাদের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ২০ জন আদিবাসী শ্রমিক বর্ধমান-সাহেবগঞ্জ লুপ লাইন ধরে নলহাটির দিকে যাচ্ছিলেন। তাদের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের বরহেট বিধানসভা এলাকায়। চাষের কাজের জন্য তাঁরা বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছিলেন। কিন্তু লকডাউনের ফলে তারা আটকে পড়েন। ট্রেন বাস বন্ধের ফলে তারা ফিরতে পারছিলেন না। এদিকে তাদের সঞ্চিত পুঁজি শেষের দিকে হয়ে এসেছিল। বাধ্য হয়ে দিন পাঁচেক আগে তারা রেললাইন ধরে বর্ধমান-সাহেবগঞ্জ লুপলাইন ধরে হাঁটা শুরু করে দেন। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে তারা নলহাটি স্টেশনের কাছাকাছি পৌঁছতেই পিছন থেকে একটি এক কামরার ট্রেন এসে দাঁড়ায়। ওই ট্রেনে ছিলেন সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার সামিম আহমেদ। তিনিই প্রথম কিছু মানুষকে রেললাইন ধরে হাঁটতে দেখে চালককে হর্ন দেওয়ার পাশাপাশি ট্রেন থামাতে বলেন। শ্রমিকদের ১০০ মিটারের মধ্যে জগধারি সেতুর কাছে ট্রেন থামিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে ট্রেনের আলো এবং হর্ন শুনে কেউ কেউ লাইন থেকে নেমে দাঁড়ায়। কিন্তু চালক ট্রেন থামিয়ে না দিলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল। কারণ তখন বেশ কয়েকজন লাইন ধরে হাঁটছিলেন। সেখান থেকেই সেকশন ইঞ্জিনিয়ারের কাছ থেকে খবর পেয়ে আরপিএফ আদিবাসীদের উদ্ধার করে স্টেশনে নিয়ে যায়। শ্রমিকরা জানান, তারা পাঁচদিন ধরে পায়ে হেঁটে নলহাটি পৌঁছেছেন। তারা বিহারের বরহেট এলাকায় যাবেন। রাতে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেন নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র প্রসাদ সিংহ। তাদের রাখা হয় সরকারি কোয়ারেন্টাইনে। শনিবার প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।

নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও জগদীশ চন্দ্র বাড়ুই বলেন, “আমরা ওদের সরকারি কোয়ারেন্টাইনে রেখেছি। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষজনকে বাসে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ওদেরও একইভাবে বাসে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন রাজ্য সরকারের মাধ্যমে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছে”।

