স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ৬ ফেব্রুয়ারি: বিয়ের পণের টাকা জোগাড় করার চাপে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা পাত্রীর বাবার। এদিকে বিয়ের পরদিনই শ্বশুরবাড়িতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল পাত্রী তথা নববধূর। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ থানার দক্ষিণ কসবা গ্রামে। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ কসবা গ্রামে। মৃতা নববধূর নাম পারুল দেবশর্মা (১৮)। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ শহর সংলগ্ন মাড়াইকুড়া গ্রামপঞ্চায়েতের দক্ষিণ কসবা গ্রামের বাসিন্দা পেশায় লটারি বিক্রেতা উত্তম দেবশর্মার মেয়ে পারুল দেবশর্মার বিয়ের ঠিক হয় হরিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ বর্মনের সঙ্গে। পাত্র পক্ষ থেকে বিয়ের পণ হিসেবে নগদ দেড় লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। হতদরিদ্র কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা উত্তম দেবশর্মা পণের সেই টাকা কোনওরকমে জোগারও করেছেন। ধার দেনা করে পণের টাকা জোগাড় করে ভীষণ মানসিক চাপে ছিলেন তিনি। বিয়ের আগের দিন রাতে বাড়ির পাশে একটি গাছে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন উত্তমবাবু। কিন্তু পরিবারের লোকজন টের পেয়ে যাওয়ায় তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে শিলিগুড়ি উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এই মুহুর্তে শিলিগুড়িতে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে ৪ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়ে উত্তমবাবুর মেয়ে পারুলের বিয়েও হয়ে যায়। বিয়ের পরদিন হরিগ্রামে শ্বশুরবাড়িতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় পারুলের। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃতা নববধূ পারুল দেবশর্মার আত্মীয় স্বজনদের মতে বাবার এই অবস্থা মেয়ে পারুল সহ্য করতে না পেরেই মানসিক অবসাদ থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। বিয়ের আগের দিন রাতে নববধূর বাবার আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা এবং বিয়ের পরদিন সেই নববধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।