আমাদের ভারত, ২২ আগস্ট: রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবকের ইতিহাস এবার রুপালী পর্দায় ফুটে উঠতে চলেছে বলে। সংঘের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবার বলিউডের সিনেমা তৈরি হতে চলেছে। প্রায় ২০০ কোটি টাকার বাজেটের সিনেমা তৈরি হবে। হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলুগু সহ মোট দশটি ভাষায় ডাবিং হবে বলে জানাগেছে।
আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত নিজে ২০১৮ সালের সিনেমা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ১৯২৫ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর তৈরি হয়েছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। ২০২৫ সালে ১০০ বছর পূরণ হবে আরএসএসের। সেই উপলক্ষে বড় পর্দায় আরএসএস’র উত্থান ও যাত্রাপথ দেখানো হবে। রুপোলি পর্দায় তুলে ধরা হবে আরএসএসের উদ্দেশ্য।
সূত্রের খবর, বলিউডের বড় তারকারা এই সিনেমায় অভিনয় করবেন। মূল চরিত্রে অক্ষয় কুমার অভিনয় করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন ভি বিজয়েন্দ্র বলে জানা গিয়েছে। তিনি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দমঠ নিয়েও চিত্রনাট্য লিখেছেন।
সূত্রের খবর, সিনেমা ছাড়াও ওয়েব সিরিজ তৈরি হবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের কাহিনী নিয়ে। ইতিমধ্যেই মোহন ভাগবত সিনেমার স্ক্রিপ্টে অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সিনেমা তৈরি করতে ১৮০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই সিনেমা মুক্তির পরিকল্পনা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তা পিছিয়ে যায়। সংঘের নেতৃত্বের পরামর্শে সিনেমার স্ক্রিপ্ট লেখা হলেও তার সাথে রাজনীতি বা নির্বাচনের কোনো যোগ থাকবেন না বলেই জানিয়েছেন চিত্রনাট্য লেখক বিজয়েন্দ্র প্রসাদ।
কন্নড় চিত্রনির্মাতা লহরি, ভেলু, নাইডু প্রথমে এই সিনেমা তৈরি করার পরিকল্পনা করেন। তিনি বিজেপিতে রয়েছেন। তিনি জানিয়েছিলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সেরা প্রতিভাদের বেছে নিয়ে সিনেমা তৈরি করা হবে। বিনায়ক দামোদর সাভারকার, কেশব বলিরাম, এমএস গোল ওয়াওকরের জীবন থেকে শুরু করে আরএসএস সংগঠনের উৎপত্তি ও বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হবে। তবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি এই সিনেমা পরিকল্পনা করেছিলেন।
আরএসএসের দক্ষিণ বঙ্গের প্রান্ত প্রচার প্রমুখ বিপ্লব রায় জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ ৯৭ বছর ধরে নিরলস ও নিঃস্বার্থভাবে স্বয়ংসেবক এবং কার্যকর্তা নির্মানের কাজ করে চলেছে। ব্যক্তি নির্মাণ, অনুশাসনবদ্ধ চরিত্রবান কার্যকর্তা সমাজের বিভিন্ন বিষয়ে সমাজ ও দেশকে সমৃদ্ধশালী করার লক্ষ্য নিয়ে সাংগঠনিক কাজ করে চলেছে। সংঘকে সময় সময় Man making Organization বা Ready for Selfless Service সংজ্ঞায় অভিহিত করা হয়েছে।
শতবর্ষের এই কাজকে সংঘের কার্যকর্তারা Nation First এইভাবে চারটি পর্যায় অনুসরণ করে। ১৯২৫-৪০ সংঘ প্রতিষ্ঠা এবং ডাঃ হেডগেওয়ারের সুনিপুণ নেতৃত্বে সারা দেশে এবং ময়মনসিংহ ঢাকা অন্যদিকে লাহোর, করাচি, সিন্ধুপ্রদেশ পর্যন্ত সাংগঠনিক বিস্তার হয়। ১৯৪১-৭৫ স্বয়ংসেবকদের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাংগঠনিক বিস্তার হয়। ১৯৭৬-৮৯ ডাঃ হেডগেওয়ার জন্মশতবর্ষে সামাজিক কাজে সাংগঠনিক প্রতিফলন ও সেবামূলক কাজের অঙ্গীকার। ১৯৯০ তৎপরবর্তী সময় সামাজিক স্বীকৃতি, বিভিন্ন বর্গের মানুষদের সংঘ কাজে যোগ দান জয়েন আর এস এস মাধ্যমে হোক বা কার্যকর্তা অধিকারীদের সংস্পর্শে এসে বিভিন্ন সামাজিক কাজে সহযোগিতা, প্রত্যক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালনে সম্মত হয়েছেন পরিচালক এসএস রাজামৌলি, তাঁর পিতা তথা কিংবদন্তী লেখক কে ভি বিজয়েন্দ্র প্রসাদ। তিনি শতবর্ষের প্রাক্কালে সংঘ কাজের সামাজিক প্রভাব আরও বড় পরিসরে জনগনের সামনে তুলে ধরবেন বলে ঠিক করেছেন। মেগা বাজেট চলচ্চিত্র পরিকল্পনা সারা দেশের গুনী কলাকুশলীদের নিয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যাবহার করা যেমন হয়েছিল আশি বা নব্বইয়ের দশকে রামায়ণ মহাভারত টিভি সিরিয়াল।

