সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, বনগাঁ, ৪ ডিসেম্বর:
বাংলাদেশ থেকে ভারতে পা রাখার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লেন বাংলাদেশি হিন্দু যাত্রীরা। চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানতে চাইলে তারা বলেন, জীবন হাতে করে দেশে ফিরলাম। প্রতিদিন যেভাবে হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলছে তা বলার অবকাশ নেই। তবে ভারতের আন্দোলনে তারা স্বস্তি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে বনবল বাড়ছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এবং সেই দেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের প্রতিবাদে গত সোমবার ভারত-বাংলাদেশ পেট্রাপোল সীমান্তে প্রতিবাদ সভা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। উপস্থিত ছিলেন সাধু, গোঁসাইরা। এই প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছিল সনাতনী ঐক্য পরিষদ। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি সভা। কিন্তু তাতেও ঝাঁঝ ছিল মারাত্মক। আর তার প্রভাব পড়েছে ওপার বাংলাতেও। সীমান্ত পেরিয়ে এসেই সেকথা বললেন তপন। তিনি বলেন, “এখানকার আন্দোলন ওখানে একটু স্বস্তি দিচ্ছে বটে। আগে যেরকম পরিস্থিতি ছিল, এখানকার আন্দোলনে একটু হলেও যেন কম।” তাঁর সঙ্গেই আসা প্রবীর পালের বক্তব্যও সেরকম। তিনি বলেন, ”রাতে ওরা যে বিক্ষোভ দেখিয়েছে, তাতে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়েছে। হাই কমিশন তৎপর হয়। পুলিশ পাড়ায় পাড়ায় এসে বলে যায়, আপনাদের কোনও সহযোগিতা লাগলে ফোন করবেন। নম্বরও দিয়ে যায়। এটা আরও ভাল হয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে চাপ তৈরি করলে, সব থেকে ভাল হয়। রাজনৈতিক দল হিসাবে নয়।”
বছর ষাটের পুষ্পা থাকেন বাংলাদেশের গ্রামে। তিনি বললেন, “মন্দির ভাঙ্গা চলছে। ভয়ের পরিবেশ মারাত্মক। লোকে ঘর থেকে বেরতেই ভয় পাচ্ছে। কেউ কারোর সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতে ভয় পাচ্ছে। এখানকার মানুষের আন্দোলনে ওখানে লাভ বলতে, ওখানকার হিন্দুদের মনোবল বাড়ে যে, কেউ পাশে রয়েছে। আগে তো কেউ ছিল না পাশে।” পরিস্থিতি মারাত্মক বাংলাদেশে। এমনই যে, কেউ কারোর সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলছে না। কৃপাসিন্ধু মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি বলেন, “সবাই ওখানে চুপচাপ। কারোর সঙ্গে কারোর কথা পর্যন্ত নেই। কোথা থেকে কী হয়ে যাবে…আন্দোলন চলছে এখানে, কিন্তু কেউ যদি ওখানে তার জেরে উচ্চবাচ্য করে, পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতে পারে…”
কার্তিক দাস বললেন, “সব জায়গায় এখনও সেই আন্দোলনের প্রভাব পড়ে না। হাই কমিশনারের বাসভবন ঘেরাও হয়েছে। তবে এই আন্দোলনে কিন্তু ওখানকার হিন্দুদের জন্য সমস্যাও হচ্ছে। তাতে যারা আন্দোলন করছে, আরও তেঁতে উঠতে পারে।” আরেক ব্যক্তি আবার অটোয় বসেই বলে ফেললেন, “বাংলাদেশ আবার বলছে, ভারতীয় মিডিয়া অতিরঞ্জিত করে খবর দেখাচ্ছে। ”