সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৮ ডিসেম্বর: অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আদালতের নির্দেশে নড়েচড়ে বসল সোনামুখী পুরসভা৷ এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সোনামুখীতে। অভিযোগ, পুরসভার আইনকে গুরুত্ব না দিয়ে চার তলা বিল্ডিংয়ের অনুমতি নিয়ে প্রোমোটার পাঁচ তলা নির্মাণ করেছেন। প্রোমোটারের বিরুদ্ধে এই বেআইনি নির্মাণ ও আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ তুলে জমির মালিক পক্ষ দ্বারস্থ হয়েছিল আদালতের। আদালত বিষয়টি খতিয়ে দেখে পুরসভাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
সোনামুখী পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সোনামুখী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় গৌতম চক্রবর্তী ও অলোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ৩২ কাঠা জমি ছিল। অভিযুক্ত নির্মাণ সংস্থা ওই জমির ওপর ফ্ল্যাট তৈরির জন্য দুই মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে। সেখানে একটি পাঁচতলা বিল্ডিংও তৈরি করে ওই নির্মাণ সংস্থা। অন্যদিকে নির্মাণ কাজ চলার সময়ই জমির দুই মালিক সোনামুখী পুরসভা এবং কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাদের অভিযোগ, নির্মাণ সংস্থা সোনামুখী পুরসভা থেকে চার তলা বিল্ডিংয়ের অনুমতি নিয়ে বেআইনি ভাবে পাঁচ তলা বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। তাছাড়া জমির মালিক পক্ষের অভিযোগ, তাদের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণাও করেছে ওই সংস্থা। পুরসভা অভিযোগ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কলকাতা হাইকোর্ট অবিলম্বে অভিযোগ খতিয়ে দেখে সোনামুখী পুরসভাকে দু’মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পুরসভার অনুমতি ছাড়াই কীভাবে নির্মাণ কাজ হয়ে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
জমির মালিকের অভিযোগ, নির্মাণকারী সংস্থাটি যথেষ্ট প্রভাবশালী। সেই প্রভাব খাটিয়েই চারতলার অনুমতি নিয়ে পাঁচ তলা বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। তাই পুরসভা নীরব। অন্যদিকে নির্মাণকারী সংস্থার মালিকের দাবি, আবাসন নির্মাণের আগেই তিনি সাত তলা বিল্ডিং তৈরির অনুমতি চেয়ে পুরসভায় আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু, সে সময় পুরসভার সর্বাধিক চারতলা বিল্ডিংয়ের অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা ছিল। তাই চারতলা বিল্ডিংয়ের অনুমতি দিয়েছিল। অন্যদিকে জমির মালিকদের তোলা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছে নির্মাণকারী সংস্থাটি।
আদালতের লিখিত নির্দেশ এখনও না এলেও পুরসভার তরফে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। পুরসভার দাবি, যেহেতু বিষয়টি আদালতে বিচার্য ছিল তাই তারা এতদিন হস্তক্ষেপ করেননি। আদালতের নির্দেশ মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্থানীয় বিজেপি এই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে পুরসভাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপির দাবি, পুর কর্তাদের সঙ্গে নির্মাণকারী সংস্থার লেনদেনেই এই বেআইনি নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।