রাজেন রায়, কলকাতা, ২২ আগস্ট: অবশেষে করোনা চিকিৎসায় সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিল স্বাস্থ্য কমিশন। শনিবার বিকেলে নিউটাউন ক্লাবে বসে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে কি কি উপায়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিল কমানো যেতে পারে, সে বিষয়ে আপাতত ৫ দফা চূড়ান্ত করল স্বাস্থ্য কমিশন। যার নেতৃত্বে ছিলেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিচারপতি অসীম কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে আগামী ২৮ আগস্ট বেসরকারি হাসপাতালগুলির বক্তব্য শুনতে বৈঠকে বসছে স্বাস্থ্য কমিশন, এই তথ্যও জানানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই চূড়ান্ত নির্দেশিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ হতে চলেছে।
কি কি রয়েছে নতুন নির্দেশিকায়? জানানো হয়েছে, চলতি বছরের ১ মার্চ পর্যন্ত যে হাসপাতালে যে নির্দিষ্ট ভাড়া নেওয়া হত, তাই বজায় রাখতে হবে। যেসব বেসরকারি হাসপাতাল ইতিমধ্যেই ভাড়া বাড়িয়েছে, তাদের ফের কমিয়ে আগের ভাড়ায় নিয়ে এসে তা হাসপাতালের ডিসপ্লে বোর্ডে স্পষ্ট করে লিখে দিতে হবে। কিন্তু কোনওভাবেই করোনার অজুহাতে বেড ভাড়া বাড়ানো চলবে না।
এছাড়া হাসপাতালে করোনা রোগীদের যত রকম টেস্ট করানো হয় তা সত্যিই প্রয়োজন আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য কমিশনের ৩ সদস্যের কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা ডক্টর প্রদীপ মিত্র, শুভেন্দু রায় ও তীর্থঙ্কর মিত্র। এই কমিটি কোন রোগীর কত বার কি পরীক্ষা হয়েছে, হাসপাতাল ভিত্তিক টেস্টের খরচ পাল্টে যাচ্ছে কিনা তা বিস্তারিত খতিয়ে দেখবে। আর কোথাও কোন ভুল থাকলে এদের সুপারিশ অনুযায়ী বিল কমাতে হবে হাসপাতালকে।
এছাড়াও ওষুধে অন্তত ১০ শতাংশ, চিকিৎসার সরঞ্জামে ২০ শতাংশ আর চিকিৎসকের ভিজিটও কিছুটা কমিয়ে বিলের অঙ্ক কমানোর সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য কমিশন। চিকিৎসা নিয়ে কোনওরকম অভিযোগ জানাতে হলে স্বাস্থ্য কমিশনের যোগাযোগের নম্বর-সহ তথ্য রোগীর পরিবারের জন্য হাসপাতালের সামনে ডিসপ্লে বোর্ডে লিখে রাখতে হবে বলেও এদিন নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
এছাড়াও আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন। একদিকে যেমন বলা হয়েছে, রোগীর পরিবার টাকা দিতে না পারলেও গুরুতর করোনা রোগীকে হাসপাতাল থেকে বার করা যাবে না। কোন কোন ক্ষেত্রে বিষয়টি মানবিকভাবে বিচার করতে হবে। আর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কোনও রোগী হাসপাতালে এলে তাকে ন্যূনতম স্থিতিশীল করে তবেই অন্য হাসপাতালে পাঠাতে হবে।

