চীন সীমান্তে শহিদ আলিপুরদুয়ারের বিপুল রায়ের বাড়িতে সস্ত্রীক রাজ্যপাল, আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরির ঘোষণা

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ৯ অক্টোবর: চীন সীমান্তে শহিদ বিপুল রায়ের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে আলিপুরদুয়ার জেলা বিন্দিপাড়ায় শহিদের বাড়িতে পৌছেলেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। শহিদের স্ত্রী এবং মায়ের হাতে ১১লক্ষ টাকার চেক তুলে দেবার পাশাপাশি পরিবারের একজনকে কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রুপ সি পদে চাকরি দেবার কথাও জানান রাজ্যের প্রথম নাগরিক।

রাজ্যপাল রাজ্যের উত্তরের প্রায় সীমানা লাগোয়া গ্রামে পৌছে শহিদের বাড়িতে দাঁড়িয়ে একদিকে যেমন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করেন, তেমনি পরোক্ষভাবে রাজ্যের হিংসার বাতাবরণ নিয়েও কটাক্ষ করে বলেন, দেশ এক নতুন উন্নত দিশায় এগিয়ে চলছে সেখানে পশ্চিমবঙ্গ পিছিয়ে থাকবে না। উল্লেখ্য, গালোয়ান ভ্যালিতে নিহত শহিদ বিপুল রায়ের বিন্দিপাড়ার বাড়িতে এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এদিন সংবাদ মাধ্যেমে রাজ্যপাল বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের শ্রেষ্ট নেতাদের মধ্যে একজন। এটা কোনও বিতর্কের বিষয় নয়। তিনি বলেন, ভারত আমূল পাল্টে যাচ্ছে। ভারত সঠিক পথেই বদলাচ্ছে। আমি দেখতে পাচ্ছি ভারতের যে পুরানো ঐতিহ্য, যে গৌরব তা ভারতে ফের ফিরে আসছে।এক্ষেত্রে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য পশ্চিমবঙ্গের যোগদান কম থাকবে না। আমি রাজ্যের প্রথম নাগরিক হওয়ার সুবাদে আমার কর্তব্য পশ্চিমবঙ্গকে কোনও ভাবেই এমন বিষয়ের পরিচায়ক হতে দেব না যাকে আমরা হিংসা বলি। কোনও দিনই পশ্চিমবঙ্গে এই পরিস্থিতি হবে না যাতে পশ্চিমবঙ্গের প্রজাতান্ত্রিক বিষয়ের উপর কালিমা লিপ্ত হয়।”

শুক্রবার পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনে সেবাবাহিনীর হেলিকপ্টারে আলিপুরদুয়ার অয়ারেড গ্রাউন্ড ময়দানে নামেন। সেখান থেকে সড়ক পথে সেনাবাহিনীর কনভয় নিয়ে সকাল ৯.২৫ মিনিটে শহিদ বিপুল রায়ের আলিপুরদুয়ারের বিন্দিপাড়ার বাড়িতে পৌঁছান সস্ত্রীক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তার আগেই গোটা এলাকাটি নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। প্রায় ৩০মিনিট শহিদ বিপুল রায়ের পরিবারের সুবিধা-অসুবিধার কথা ধৈর্য ধরে শোনেন রাজ্যপাল। এরপর তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে সাড়ে পাঁচলক্ষ টাকা তুলেদেন শহিদ বিপুল রায়ের স্ত্রী রুম্পা রায়ের হাতে।

অন্যদিকে রাজ্যপালের স্ত্রী বিপুলের মা কুসুম রায়ের হাতে তুলে দেন আরও সাড়ে পাঁচলক্ষ টাকা। যেহেতু রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই শহিদ জওয়ানের স্ত্রীকে জেলা শাসকের দফতরে করণিকের চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাই বিপুলের পরিবারের একজনকে কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রুপ সি পদে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্যপাল। ওই শহিদ পরিবারের সাথে প্রায় চল্লিশ মিনিট কাটিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলন, “এখানে রাজনীতি করতে আসিনি। দেশের জন্যে শহিদ হওয়া বীর জওয়ানের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এসেছি। ভারত সঠিক দিশায় এগোচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে একজন। সে বিষয়ে কোনও মতান্তর নেই। আজ আমরা যে অর্থ সাহায্য করলাম তা এই শহিদ পরিবারের আত্মত্যাগের কাছে কিছুই না। আমরা চাই এই পরিবারটি ভাল থাকুক,সুস্থ থাকুক এবং সকলেই এই পরিবারকে যথাযথ সম্মান প্রদান করুন।”

এদিকে রাজ্যপাল চলে যাবার পর শহিদের স্ত্রী রুম্পাদেবী জানান,”সবাই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই আমাকে চাকরি দিয়েছে। আজ রাজ্যপাল স্বয়ং আমাদের বাড়িতে এসেছেন। আমরা সবার কাছেই কৃতজ্ঞ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *