প্রতিশ্রুতিই সার! দক্ষিণ দিনাজপুরে ক্ষেত-নদী উৎসবের ফুটবল চ্যাম্পিয়নরা আজও পায়নি সিভিকের চাকরি, লিখিত অভিযোগ পুলিশ সুপারকে

পিন্টু কুন্ডু, দক্ষিণ দিনাজপুর, ৫ ডিসেম্বর: প্রতিশ্রুতির পরেও ক্ষেত-নদী উৎসবের ফুটবল চ্যাম্পিয়নরা পায়নি সিভিকের চাকরি। ক্ষোভের সুর খেলোয়াড়দের মধ্যে। জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে সরব সাত ফুটবল চ্যাম্পিয়ন। ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চক্রান্তেরও অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন খেলোয়াড়রা। আর যাকে ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। তদন্ত করে খতিয়ে দেখার আশ্বাস জেলা পুলিশের।

জানাগেছে, ২০১৮-১৯ সালে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে জেলায় আয়োজিত হয় ক্ষেত-নদী উৎসব। প্রথমে বিভিন্ন ক্লাবের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ওই ফুটবল প্রতিযোগীতা। যেখান থেকে উঠে আসা ফুটবল চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে জেলার প্রতিটি থানার অধীনে গঠিত হয় একটি ফুটবল টিম। বালুরঘাট থানার অধীনস্থ টিমে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হিলি ব্লকের আদিবাসী সম্প্রদায়ের যুবকরাই বেশি স্থান পায়। ১২ জানুয়ারি ২০১৯ সালে বালুরঘাট পুলিশ লাইন মাঠে বালুরঘাট থানা এবং গঙ্গারামপুর থানার হয়ে ফাইনাল ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন চ্যাম্পিয়নরা। যে খেলায় প্রথম হয় বালুরঘাট থানা। পুরুস্কার হিসাবে ৫১ হাজার টাকার চেকও দেওয়া হয়েছিল বিজয়ী দলকে। যার এক টাকাও পাননি ওই খেলোয়াড়রা বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, চ্যাম্পিয়ন টিমের মধ্যে যোগ্যতার ভিত্তিতে ১১ জনকে সিভিকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল জেলা পুলিশ। অভিযোগ, যার পরেও মাত্র চার জনের নাম এসেছে ওই তালিকায়। বাকি ৭ জন কি কারণে বাদ গেল সেই প্রশ্ন তুলে জেলা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ফুটবল চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়রা। তাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে চ্যাম্পিয়ন টিমের সদস্যদের অধিকাংশকেই বাদ দিয়ে ভুয়ো নাম ঢোকানো হয়েছে সেই তালিকায়। যার কারণেই প্রকৃত খেলোয়াড়রা বাদ পড়েছে সিভিকের চাকরি থেকে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এমন ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমতো আলোড়ন ছড়িয়েছে গোটা জেলাজুড়ে। যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে জেলা পুলিশ।

যদিও হিলি ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মিহির সরকার জানিয়েছেন, চাম্পিয়নদের সিভিকের চাকরি দেবার কথা বলা হয়েছিল। তবে কেন অধিকাংশের নাম বাদ গেল সে বিষয়ে তদন্তের দাবি জানাবেন তিনি। এর মধ্যে রাজনৈতিক অভিসন্ধির কোনও বিষয় নেই।

বিরজু সোরেন, রুপম মালো ও পীযূষ মালী নামে চ্যাম্পিয়ন টিমের তিন খেলোয়াড়রা জানিয়েছেন, তাদের আশ্বাস দিয়েও এখনো সিভিকের চাকরি দেওয়া হচ্ছে না। ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তারা। রাজনৈতিক চক্রান্তের কারণে তাদের মত দুঃস্থ ছেলেরা সিভিকের চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

তালিকায় নাম ওঠা এক খেলোয়াড় অভিজিৎ হাঁসদা জানিয়েছেন, পুলিশ লাইন থেকে ফোন করে তাকে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে বাকিদের নাম কেন ওঠেনি সে বিষয়ে অন্ধকারে রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *