রাজেন রায়, কলকাতা, ৮ ফেব্রুয়ারি: অ্যাপ বিভ্রাট সহ অনেক টালবাহানার পর অবশেষে রাজ্যে শুরু হল দ্বিতীয় দফা টিকাকরণ। চিকিৎসক- স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রথম দফায় করোনা টিকা দেওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় এবার টিকা দেওয়া শুরু হল পুলিশ এবং পুরসভা কর্মীদের। আর দ্বিতীয় দফার শুরুতে প্রথম টিকা দেওয়া হল সদ্য-প্রাক্তন কলকাতা পুলিশ কমিশনার তথা নবনিযুক্ত এডিজি সিআইডি অনুজ শর্মাকে। টিকা নেওয়ার পর অনুজ শর্মা জানান, টিকাতে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই, নিয়মমাফিক ২৮ দিন দিন পর তিনি দ্বিতীয় বুস্টার নেবেন। তাঁর পাশাপাশি টিকা নিলেন রাজ্য পুলিশের ১০৪ জন কর্মী।
সোমবার প্রথম টিকা নেন বিদায়ী পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। তারপরই নতুন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এর আগেই কলকাতা পুলিশের সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের একটি বিশেষ বৈঠকে টিকাকরণ প্রক্রিয়া সম্বন্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই মত বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আপাতত সোমবার থেকে কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে শুরু হবে টিকাকরণ। প্রথমে পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা এবং ধাপে ধাপে পুলিশের নিচুতলার কর্মীদের টিকা দেওয়া হবে। কলকাতা পুলিশ হাসপাতাল ছাড়াও কয়েকটি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি হাসপাতাল সহ মোট ১০টি জায়গা থেকে টিকা দেওয়া হবে। আপাতত পুলিশ কর্মীদের জন্য পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড প্রয়োগ করা হবে।
লকডাউন ঘোষণার সময় থেকে একেবারে প্রথম সারিতে থেকে লড়াই করা, কনটেনমেন্ট জোন পাহারা দেওয়া, বাজার করে দেওয়া- সব কাজই করতে হয় পুলিশ কর্মীদের। করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান ২৩ জন অফিসার ও পুলিশ কর্মী। এখনও পর্যন্ত ৪১২১ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে তিনজন পুলিশ কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। অনেকেই করোনা পরবর্তী নানা সমস্যায় ভুগছেন।

ইতিমধ্যে গত ডিসেম্বরেই ৩৭৮৫০ জন পুলিশ কর্মীর নামের তালিকা তৈরি করেছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের যে ইউনিট বা ডিভিশন যে সরকারি হাসপাতালের কাছে রয়েছে, সেই হাসপাতালেই টিকাকরণ হবে। অর্থাৎ উত্তর কলকাতার থানাগুলির পুলিশকর্মীদের টিকা দেওয়া হতে পারে আর জি কর হাসপাতালে। আবার মধ্য কলকাতার ক্ষেত্রে তা হতে পারে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রত্যেকের মোবাইলে পৌঁছে যাবে এসএমএস। ধাপে ধাপে জানিয়ে দেওয়া হবে কাকে, কোথায়, কখন দেওয়া হবে টিকা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, মার্চ মাস থেকে পঞ্চাশোর্ধদের দেওয়া হবে করোনার টিকা। কলকাতা পুরসভা পঞ্চাশোর্ধ সাধারণ মানুষের নামের তালিকা তৈরি করার কাজ শুরু করে দিয়েছে। ধাপে ধাপে সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে রাজ্য সরকার।

