বাড়ি ফিরলেন খড়দহের প্রথম করোনা আক্রান্ত

আমাদের ভারত, ২৬ এপ্রিল: উত্তর শহরতলির ব্যারাকপুর এলাকায় একই দিনে দুঃসংবাদের সঙ্গে সুসংবাদ।
একদিকে যেমন শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে এ দিন আরও একজন করোনা আক্রান্ত হলেন, তেমনই এই এলাকার প্রথম করোনা আক্রান্ত খড়দার পরেশ রায় সুস্থ হলেন। এদিন দমদম নাগেরবাজার হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় তাঁকে ফুল এবং করতালি দিয়ে অভিবাদন জানান চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীরা।

সকলের শুভেচ্ছা নিয়ে শনিবার হাসপাতাল থেকে বাড়ির পথ ধরলেন ৬১ বছর বয়সী পরেশ ঘোষ। পরেশ বাবু পেশায় ব্যবসায়ী। থাকেন খড়দহ মধ্যপাড়ায়। ২৬ মার্চ শরীরে জ্বর এবং কাশি নিয়ে ভর্তি হন নাগেরবাজারের বেসরকারি হাসপাতালে। শরীরে করোনা উপসর্গের লক্ষণ থাকায় তাঁকে আইসোলেশনে রাখা হয়।

মোট ছ’বার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান পরেশ বাবু। প্রথম ৪ বার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। মহামারীর কবলে পড়ে যাওয়ায় আদৌ বাঁচবেন কিনা সেই চিন্তা হয়েছিল তারও। কিন্তু মনের জোর হারাননি। ভেবেছিলেন, শেষ দেখার আগে লড়াই ছাড়বেন না। চিকিৎসা বা ওষুধ ছাড়া এই মনের জোর একজন রোগীর সুস্থ হওয়ার জন্য অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

আর পরেশবাবুর মনের জোরের কাছে হার মানতেই হল মহামারী করোনাকে। সম্প্রতি পরপর দু’বার নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। আর নেগেটিভ রিপোর্টে স্বস্তি আসে ঘোষ পরিবারে। এদিন তাকে সুস্থ ঘোষণা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরেশ বাবুর বুকে পেসমেকার রয়েছে। একবার গলব্লাডার থেকে পাথর বের করতে অপারেশন করা হয়েছিল। এছাড়া কোনও শারীরিক অসুস্থতা নেই।

কেমন হল এই করোনা অসুস্থতার অভিজ্ঞতা? পরেশবাবু জানিয়েছেন, ২৪ মার্চ জ্বর এসেছিল। একদিন অপেক্ষা করেই হাসপাতলে চলে আসি। ভর্তি করে নেয় হাসপাতাল। চিকিৎসা শুরু হয়। ৩১ মার্চ জ্বর কমে যায়। দুদিন বাদে কাশিও গায়েব। তবে করোনা পজিটিভ আসায় হাসপাতালে থেকে যেতে হয়। ৩১ মার্চ লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়। রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এক সপ্তাহ বাদে আবার পজেটিভ। তার দু’দিন বাদে একই রিপোর্ট। তবে ভয় পেয়ে যাইনি। কারণ এই রোগ যন্ত্রণা দিচ্ছিল না। দিব্যি সুস্থ ছিলাম। চিকিৎসকদের অভয়বাণীও মনে জোর দিয়েছে। নিশ্চিত ছিলাম, রিপোর্ট নেগেটিভ হবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা। অবশেষে ফলাফল আপনাদের সামনে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অসুস্থতা বোধ হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যান। সময়মতো চিকিৎসা শুরু হলে ভয়ের কোনও বিষয় নেই। নিজেও সুস্থ হবেন।পরিবার, প্রতিবেশীরাও সুস্থ থাকবেন। কোনও লজ্জা বা ভয়ে রোগ লুকোলে নিজেও বিপদে পড়বেন আর সকলকে বিপদে ফেলবেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *