স্ট্রেন্থ লিফটিং’য়ে রাজ্যে প্রথম কুমারগঞ্জের ছেলে, খুশির হাওয়া প্রত্যন্ত এলাকায় নেশাসক্ত যুব সমাজকে শরীর চর্চার বার্তা ইরফানের

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৩১ আগস্ট: ওপেন ওয়েস্ট বেঙ্গল স্ট্রেন্থ লিফটিং এন্ড আইবিপি চ্যাম্পিয়নশিপে রাজ্যে প্রথম হলেন সীমান্তের প্রত্যন্ত এলাকার ছেলে। মুর্শিদাবাদের শালারে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নশিপে তিন দিন ব্যাপী এই প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ৬৫ জন প্রতিযোগী। যেখানে নিজের নাম উজ্জ্বল করেছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সুন্দরপুরের ইরফান মন্ডল। তার এই সাফল্যে খুশি এলাকার বাসিন্দারা।

কুমারগঞ্জের সুন্দরপুরের বাসিন্দা জাহির হোসেন মণ্ডলের ছেলে ইরফান। দেরাদুন কলেজে কৃষি‌ বিষয়ে পাঠরত ওই ছাত্র এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। ওপেন ওয়েস্ট বেঙ্গল স্ট্রেন্থ লিফটিং এন্ড আইবিপি চ্যাম্পিয়নশিপে রাজ্যে প্রথম স্থান অর্জন করার পরেই তার আগামী লক্ষ্য ন্যাশনাল লেভেলের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা। আগামী তিনমাসের মধ্যেই গোয়ায় অনুষ্ঠিত হবে সেই প্রতিযোগিতা।

জানা গেছে বাড়িতে থাকার সময় পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় যুবকদের নিয়ে শরীরচর্চার কর্মশালাও করতেন ইরফান। সীমান্ত এলাকায় নেশা থেকে যেন যে কোনও প্রকারে যুব সমাজকে দূরে রাখা যায় সেই উদ্যোগ নিয়েই গ্রামের ছেলেদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় মনোনিবেশ করেছিল সে। কিন্তু পড়াশোনার জন্য কয়েক বছর আগে দেরাদুন চলে যান তিনি। সেখানেই একটি জিমের সদস্য হন। ওই সংস্থার সহায়তায় রাজ্য স্ট্রেন্থ লিফটিং’য়ে অংশ নেন তিনি। যেখানেই প্রায় ৬৫ জন প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন ইরফান। দুটি মেডেল ও শংসাপত্র দিয়ে সম্মানও জানানো হয়েছে তাকে। আর যা নিয়ে প্রত্যন্ত এলাকায় ছুটে আসতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন প্রতিবেশীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে ইরফানের সাথে দেখা ও কথা বলতে ছুটে আসেন সীমান্ত এলাকার মানুষেরা।

ইফরান মন্ডল জানিয়েছেন, আগামীতে তার লক্ষ্য ন্যাশনাল লেভেলে অংশ নিয়ে ভালো ফল করা। নেশাসক্ত যুব সমাজকে বাঁচাতে শরীরচর্চার উপর জোর দেবার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।

ইরফানের বাবা জাহির হোসেন মন্ডল জানিয়েছেন, কৃষির ওপর পড়াশোনা করতে ছেলেকে দেরাদুন পাঠিয়েছিলেন। তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার ছেলে শরীর চর্চা করত। সকলের মুখ উজ্জ্বল করেছে সে। গ্রাম্য এলাকায় এমন সাফল্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

প্রতিবেশী মমতাজু ইসলাম চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম চৌধুরীরা বলেন, ইরফান তাদের এলাকার গর্ব। তাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে সে। নেশামুক্ত সমাজ গড়ার পাশাপাশি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় সকলেই তাকিয়ে রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *