পারুল খামারিয়া, আমাদের ভারত, কলকাতা, ৪ মার্চ: কৃষিকাজ প্রধান আমাদের দেশ। এই দেশের ৭৫ কোটির বেশি মানুষ কৃষিকাজের সাথে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িত। মূলত কৃষির উপর ভিত্তি করেই দেশের শিল্পের প্রসার হচ্ছে। শিল্পজাত দ্রব্য নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু কৃষক তার উৎপাদিত ফসলের লাভকারী মূল্য পাচ্ছেন না। কেন্দ্রীয় সরকার নূন্যতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করে প্রতি বছর নির্দিষ্ট কিছু ফসলের। কিন্তু সেই ফসলও কৃষকরা সহায়ক মূল্যে বিক্রি করতে পারেন না। কৃষক ও ক্রেতার মাঝে ঢুকে যাচ্ছে ফঁড়েরা। সেই ফঁড়েরা কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কম দামে কিনে বেশি দামে বাজারে বিক্রি করছে। কৃষক কিন্তু তার উৎপাদিত ফসলের লাভকারী মূল্য পাচ্ছে না। অর্থাৎ লাভের গুড় খেয়ে গেল পিঁপড়ে। এইসব পিঁপড়ে তাড়ানোর শপথ নিল কৃষকরা।
আজ ৪ মার্চ, ২০২৫। আজকের দিনেই ১৯৭৯ সালে, রাজস্থানের কোটা শহরে গঠিত হয়েছিল ‘ভারতীয় কিষাণ সংঘ’, প্রতিষ্ঠাতা দত্তপন্থ বাপুরাও ঠেংরি। সারা ভারতের কার্যকর্তারা মিলে তৈরি করেছিলেন এই সংগঠন।
মূলত কৃষকদের ফসলের লাভকারী মূল্য আদায়, জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ, দেশি গো-মাতা পালন, জল সংরক্ষণ করে চাষের কাজে ব্যবহার, আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে কৃষিকাজ, সমন্বিত কৃষিকাজ, কৃষকের জীবনের মানের উন্নয়ন ইত্যাদি উদ্দেশ্য নিয়ে ভারতীয় কিষাণ সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের লাভকারী মূল্য যাতে পান তার জন্য ভারতীয় কিষাণ সংঘ লড়াই করছে। কেন্দ্রীয় সরকার নূন্যতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করেছেন চাপে পড়ে, কিন্তু তা যথাযথ মূল্য নয়। কৃষক যাতে বাজারে তার ফসল ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারে তার ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। ‘ফঁড়েরাজ’ দূর করার জন্যও ভারতীয় কিষাণ সংঘ চেষ্টা করছে।
আজকের প্রতিষ্ঠা দিবসে ভারতীয় কিষাণ সংঘের প্রতিটি কৃষক ও কার্যকর্তা শপথ নেন যে- কৃষক ও ক্রেতার মধ্যের ফঁড়ে বা পিঁপড়েকে তাড়াবেন- বলে।
আজকের প্রতিষ্ঠা দিবস সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের সাধারণ সম্পাদক আশিস সরকার বলেন, আজ ভারতীয় ৪৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস। আজকের দিনে আমরা ‘গো-কৃষি-বাণিজ্য’-এর প্রসার, ফঁড়েরাজ শেষ ও কৃষকরা যাতে নিজের উৎপাদিত ফসলের দাম নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারে- তার জন্য শপথ নিলাম। আমাদের রাজ্যের প্রতিটি কৃষক নিজেদের অধিকার যেন পান- ভগবান বলরামের কাছে এই প্রার্থনা জানালাম।
ভারতীয় কিষাণ সংঘের পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের ‘প্রচার প্রমুখ’ ও ‘ভারতীয় কিষাণ বার্তা’ পত্রিকা সম্পাদক মিলন খামারিয়া বলেন, ভারত তথা বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো সংগঠন ভারতীয় কিষাণ সংঘ। আমাদের দেশের ৪৩ লক্ষের বেশি মানুষ কিষাণ সংঘের সদস্য হয়েছেন। কৃষকদের অধিকারের জন্য আমরা লড়াই করছি। কৃষকদের জীবনের সার্বিক অধিকার পাইয়ে দেবার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। ফঁড়েরাজ শেষ করে কৃষকদের তার ফসলের লাভকারী মূল্য পাইয়ে দেওয়া আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। এই বিষয় নিয়ে বিভিন্ন ভাবে আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি।
Fine,
Congratulations!