রাজ্য নেতৃত্বের সামনে বিজেপিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রামপুরহাটে

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ২৬ আগস্ট: রাজ্য নেতৃত্বের সামনে রামপুরহাটে প্রকাশ্যে এল বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। পুরনোদের বাদ দিয়ে কিছু ভুঁইফোঁড়দের দলের সামনের সারিতে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে অভিযোগ। রাজ্য নেতৃত্ব বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করতে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।

বুধবার রামপুরহাটে বিধানসভা ভিত্তিক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। রামপুরহাট ১ ও মহম্মদবাজার ব্লকের চারটি মণ্ডলের সভা হয় দুটি পর্যায়ে। সেই মতো বিধানসভা এলাকার সমস্ত মণ্ডল সভাপতি, সদস্যদের ডেকে পাঠানো হয়। সভায় রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বীরভূমের সহকারি অবজারভার বিবেক সোনকার, জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল সহ জেলা নেতৃত্ব। জেলার সহকারি অবজারভার রামপুরহাটের দলীয় কার্যালয় কামারপট্টির অফিসে আসতেই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী তাঁকে ঘিরে ধরেন। তাদের বক্তব্য শোনার অনুরোধ করেন। সেই মতো বিবেকবাবু তাদের সঙ্গে দুপুরে আলোচনায় বসার আশ্বাস দেন।

বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা অভয় শঙ্কর রায় বলেন, “জেলা সভাপতি হিটলারের মতো দল চালাচ্ছেন। পুরনো কর্মীদের গুরুত্বহীন করে দলের ক্ষতি করছেন, এমন লোককে দলের দায়িত্ব দিয়েছেন যাদের দলের প্রতি কোনও আনুগত্য নেই। তাই আমরা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে সময় চেয়েছি। তিনি আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আশ্বাস দিয়েছেন”।

নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি ঝলক মণ্ডল বলেন, “জেলা সভাপতি এক সঙ্গে ৩৩ জন মণ্ডল সভাপতিকে সরিয়ে দিয়ে নিজের পছন্দের লোকদের বসিয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই সভাপতি কর্মীদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখে না। ফেসবুকে দলের বিরুদ্ধে কথা বলে। কর্মীদের মারার হুমকি দেয়। আমাদের দাবি, নির্বাচনের ভিত্তিতে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন করা হোক”।

শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, “আমরা ওদের সঙ্গে বসেছিলাম। আমি বলেছিলাম তোমাদের আরও গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব দিয়ে নিয়ে আসব। কিন্তু তারা কথা শুনতে চাইছে না। বিজেপি একটি সাংগঠনিক দল। নিজের ইচ্ছে মতো সব কিছু হয় না। আর কেউ যদি পিকের দালালি করে তাহলে মেনে নেব না”। দুপুরের দিকে পৃথকভাবে অন্য একটি জায়গায় বৈঠক করেন বিবেক সোনকার। সেখানে বিক্ষুব্ধরা অভিযোগ করেন, জেলা সভাপতি অবৈধ লেনদেন করছেন। যারা এখনও তৃণমূলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনে রয়েছেন এমন কয়েকজনকে দলের সামনের সারিতে নিয়ে আসা হয়েছে।

নলহাটির অনিল সিং বলেন, “আমি জেলা কমিটিতে থাকলেও আমাকে কোনও মিটিং করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি কোনও সভা সমিতিতে ডাকা হচ্ছে না। দলের বিস্তার করতে গেলে সঙ্কীর্ণতা পরিত্যাগ করতে হবে”।

বিক্ষুব্ধদের কথা শোনার পর বিষয়টি রাজ্য সভাপতি দিলিপ ঘোষকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন বিবেক সোনকার। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “বিজেপিতে সারাজীবন কেউ সভাপতি থাকে না। তিন বছর অন্তর পরিবর্তন হয়। ওরা আমার সঙ্গে বসতে চেয়েছিল। আমি আলাদা জায়গায় ওদের সঙ্গে বসেছি। আলোচনায় ওরা খুশি। দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *