দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মসূত্রে যাওয়ার আগে মাঝসমুদ্রেই জাহাজ থেকে উধাও বাঁশদ্রোণীর ইঞ্জিনিয়ার

রাজেন রায়, কলকাতা, ২১ জুন: কর্মসূত্রে স্বামীর সমুদ্রে পাড়ি নতুন কিছু নয় বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা জয়তীদেবীর কাছে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার আসা একটি ফোন যেন পুরো পৃথিবীটাই বদলে দিয়েছে জয়তীদেবীর। ওই ফোনে স্বামীর সংস্থা তাকে জানায়, মঙ্গলবার ডিনার করলেও বুধবার সকালের ব্রেকফাস্টের সময় থেকে আর খোঁজ মিলছে না জয়তীদেবীর স্বামী সম্বিত মজুমদারের। তারপর থেকে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তিনি।

৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতা ছেড়েছিলেন তিনি। যাওয়ার কথা ছিল সিঙ্গাুপর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার ডায়সন বন্দরে। কিন্তু যাওয়ার পথে মাঝ সমুদ্রে জাহাজ থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে গেলেন আদতে কলকাতার বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা এক ইঞ্জিনিয়ার সম্বিত মজুমদার। ওই মেরিন ইঞ্জিনিয়ার লাইবেরিয়ার একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কার এমটি সেরেঙ্গার সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন। দক্ষিণ চিন সাগরে এই মুহূর্তে রয়েছে তাঁর জাহাজ। নিখোঁজ সম্বিতবাবুর কেবিনে খোঁজ করলে মেলে মোবাইল ফোনটি। এই খবর বাঁশদ্রোণীর বাড়িতে পৌঁছতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে পরিবারের সদস্যদের।

সম্বিতবাবুর স্ত্রী জয়তীদেবী জানান, সিঙ্গাপুর হয়ে ২৩ জুন কোরিয়ার ডায়সন বন্দরে নামার কথা ছিল তাঁর স্বামীর। গত বৃহস্পতিবার থেকে স্বামীর কোনও খোঁজ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত বাণিজ্যিক পণ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত জাহাজের নাবিকদের আন্তর্জাতিক ফোরাম ইন্টারন্যাশনার বারগেনিং ফোরাম (আইবিএফ)-এর দ্বারস্থ হয়েছেন সম্বিতবাবুর স্ত্রী। জাহাজের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ খতিয়ে দেখতে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। সম্বিতবাবুর স্ত্রী জয়তী আরও জানান, তাঁর স্বামী ডায়নাকন ট্যাঙ্কার ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার হয়ে ওই জাহাজে সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। নাইজেরিয়ার এসক্রাভোস তেলের খনি থেকে তেল বোঝাই করে দক্ষিণ কোরিয়ার ডায়সান বন্দরের দিকে জাহাজ রওনা হয়েছিল। মাঝে সিঙ্গাপুরের একটি বন্দরেও থেমেছিল ওই জাহাজ। এই সমস্ত খবর ১৩ জুন পর্যন্ত স্বামীর কাছ থেকেই স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে পেয়েছিলেন। তাঁর স্বামীও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিলেন এবং তাকে কোনও সমস্যার কথা বলেননি। আইবিএফ জয়তীদেবীকে জানিয়েছে, জাহাজ দক্ষিণ কোরিয়ার ডায়সন বন্দরে পৌঁছলেই নিয়মানুযায়ী সমস্ত নাবিকদের আটক করে ঘটনার তদন্ত শুরু করবে দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *