পুরনো রেডিওটা ঝেড়ে মুছে পরিষ্কারে ব্যস্ত মোহনবাটির দত্ত পরিবার সদস্য, কাকভোরে শুনতে হবে যে, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহালয়া

স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ১৬ সেপ্টেম্বর: মহালয়া মানেই রেডিওতে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠস্বর ” ইয়া দেবী সর্বভূতেষু….. “। কাকভোরে রেডিওতে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র ও মহিষাসুর মর্দিনীর এই যুগলবন্দী সকল বাঙালীর কাছে পুজো আগমনীর সুর বেঁধে দেয়। চিরাচরিত এই ধারা বঙ্গ জীবনের অঙ্গ হিসেবে চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তবে প্রযুক্তির আগ্রাসন ও দৃশ্যশ্রাব্য মাধ্যমের অতি দানবীয়তা এমনকি চাইলেও শোনা যায় এমন সহজলভ্যতা রেডিওতে মহালয়া শোনার একটা নস্টালজিক ভাবনা থেকে বাঙালীকে দূরে ঠেলতে পারেনি। রেডিওতে মহালয়া শোনার সেই নস্টালজিয়া দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে ধরে রেখেছেন রায়গঞ্জ শহরের মোহনবাটির দত্ত বাড়ির পরিবারের সদস্যরা। আজও মহালয়ার আগের দিন বহু পুরোনো রেডিও হাতে নিয়ে তা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে নতুন ব্যাটারি লাগিয়ে তৈরি হয়ে বসে থাকেন পরিবারের অন্যতম সদস্য গোবিন্দ দত্ত। জানালেন রেডিওতে মহালয়া শোনার মজাটাই আলাদা।

এমনিতেই বাড়িতে মন্দির দালানে দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে পূজিতা হয়ে আসছেন দেবী দুর্গা। আর তার সাথে মহালয়ার দিনে ভোররাতে উঠে একঘরে বসে রেডিওতে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের মহালয়া শোনারও অভ্যাস রয়ে গিয়েছে রায়গঞ্জ শহরের মোহনবাটি এলাকার দুর্গাভান্ডারের বাড়ি বলে পরিচিত দত্ত বাড়িতে। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়ে বা পরিবারের সদস্যরা টিভিতে জমকালো মহালয়ার অনুষ্ঠান দেখতে অভ্যস্ত হলেও রেডিওতে মহালয়া শোনা আজও দত্ত বাড়ির পরিবারের সদস্যদের কাছে এক অন্যরকম অনুভূতি। রেডিওতে মহালয়া শোনার ভালোলাগাটাই অনন্য সুন্দর এক অনুভূতি বলে মনে করেন দত্ত বাড়ির অন্যতম সদস্য গোবিন্দ দত্ত। তাঁর কাছে অতীত বড় সুন্দর, পুরাতন অনেক কাছের। আর তাই মহালয়ার আগের দিন গোবিন্দবাবু তাদের চল্লিশ বছরের পুরোনো রেডিওটি হাতে নিয়ে তা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে নতুন ব্যাটারি লাগিয়ে তৈরি করে রাখছেন বৃহস্পতিবার ভোরে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের মহালয়া শোনার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *