রাজেন রায়, কলকাতা, ২১ মে: পশ্চিমবঙ্গ ফের ঘুরে দাঁড়াবেই। পাশে আছি, পরিস্থিতি ঠিক সামলে নেব। বৃহস্পতিবার ঠিক এই কথা লিখেই ট্যুইট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে কোন পথে দ্রুত বাংলা ঘুরে দাঁড়াবে, সেই পরিকল্পনা ঘোষণার পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করতে মন্ত্রীদের জেলা ভাগও করে দিলেন তিনি।
করোনায় ইতিমধ্যেই চ্যালেঞ্জের মুখে পশ্চিমবঙ্গ। এবার ঝড়বিধ্বস্ত বাংলার উন্নয়নে ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গেই জানিয়েছেন,
শনিবার তিনি নিজে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাবেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা ঠিক যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে পরিস্থিতি সামলে নেব। হয়তো সব কিছু ফিরিয়ে দিতে পারবো না। কিন্তু আস্থা রাখুন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার আপনাদের পাশে আছে।’
Cyclone #Amphan has left a trail of devastation beyond our thoughts. While the material damage is substantial, Bengal stands united in this time of crisis. Together we will overcome this because nothing can dampen the spirit and strength of the people of Bengal.
জয় বাংলা।
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 21, 2020
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের বিভিন্ন মন্ত্রীকে আলাদা আলাদা করে জেলা ভাগ করে দেন। আগামী কয়েকদিন ওই মন্ত্রীদের কাজ হবে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলি ঘুরে তার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা এবং কিভাবে তা পুনর্গঠন করা যায় তার খতিয়ান রাজ্যকে পেশ করার জন্য। জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার দায়িত্বে থাকছেন সুজিত বসু ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। নদিয়া, মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর ঘুরে দেখবেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়গ্রামের দায়িত্বে থাকছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান ও আসানসোলের দায়িত্ব দেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। ববি হাকিমকে বলা হয়েছে পূর্ব বর্ধমান ও হুগলি ঘুরে দেখতে। হুগলিতে ববি হাকিমকে সাহায্য করবেন দিলীপ যাদব। অরূপ রায় ও পুলক রায় দেখবেন হাওড়া। উত্তরবঙ্গের ৫ জেলা দেখবেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্বে থাকবেন মন্টুরাম পাখিরা।
দ্রুত যাতে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরা যায়, তার জন্য কিছু পরিকল্পনা বেঁধে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘূর্ণিঝড়ে সব চেয়ে গাছের ক্ষতি হয়েছে। তাই বন দফতরকে আলাদা করে প্রচুর গাছ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মৎস্যজীবীদের সাহায্য করতে নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্যুৎ দফতরকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করারও নির্দেশ দিয়েছেন। বিভিন্ন এলাকাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা তুমুল বিপর্যস্ত হয়েছে। তাই দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা ফেরানোর দিকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। করোনা বিধ্বস্ত রাজ্যে উৎপাদনহীন রাজ্যে উৎপাদনের একমাত্র পথ কৃষি ও উদ্যানপালন। তাই কৃষি দফতরের সঙ্গে পঞ্চায়েত, খাদ্য, উদ্যানপালন, সেচ, মৎস্যচাষ, স্বাস্থ্য– সব দফতর একসঙ্গে কাজ করে ৭ দিনের মধ্যে সার্ভে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জলের সমস্যা যাতে না হয়, তা দেখতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।