সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ৮ সেপ্টেম্বর: মহৎ পেশার মধ্যে একটি পেশা হল চিকিৎসাকতা। একজন রোগী চিকিৎসককে ভগবানের মতো দেখেন। তাই চিকিৎসকের দায়িত্ব অনেক বেশি। আবার কিছু চিকিৎসক আছেন যারা তাঁদের নৈতিক কর্তব্য পালন তো করেন এমনকি মানবিক কর্তব্যও পালনে পিছুপা হন না। তাঁদের মধ্যে একজন চিকিৎসক স্মরজিৎ চৌধুরী। তিনি বারাসাত জেলা হাসপাতালের দন্ত চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সাঁইতিরিশের যুবক প্রসেনজিৎ সরকার, সে শারীরিক প্রতিবন্ধীকতার কারণে কানে শুনতে ও কথা বলতে পারে না। কিছুদিন আগে অতিরিক্ত দাঁতের যন্ত্রনা হওয়ার জন্য তার পরিবার তাকে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার সমস্যার কথা শুনে এক্সরে করতে বলা হয় এবং এক্সরে রিপোর্টে মুখের নিচের চোয়ালের বামদিকের অংশ ভেঙ্গে দেখায়। দাঁতের চোয়ালের অংশ ভেঙ্গে গেলে তা ঠিক করার জন্য এক ধরণের প্লেট ব্যবহার করা হয়। রোগীর যন্ত্রনা লাঘব করার জন্য তাড়াতাড়ি নিজের অর্থ দিয়ে অস্ত্রপচারের পেল্ট সহ অন্যান্য সামগ্রী কিনে তার চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসক। প্রায় দুই ঘন্টার প্রচেষ্টায় সঠিক ভাবে প্লেটটি বসানো হয় এবং রোগী এখন সুস্থ, কিছুদিন পরে তাকে আবার চেক আপ করা হবে। এই অপারেশনে চিকিৎসক স্মরজিৎ চৌধুরীর সঙ্গে ছিলেন জুনিয়ার চিকিৎসক পৌষালি সিকদার ও শিবানী তিব্রেবালা, ও ডেন্টাল অ্যাসিস্টেন্ট প্রণময় ঘোষ সহ প্রমুখ।
হাসপাতালে উপস্থিত অন্য আর এক রোগীর পরিবারের সদস্য বলেন, আগে কোনোদিন ও বারাসত জেলা হাসপাতালে এত বড়ো জটিল অস্ত্রপচার হয়নি, শুধু তাই নয় এই দন্ত চিকিৎসক স্মরজিৎ চৌধুরী মাস তিনেক আগে বারাসত জেলা হাসপাতালে আসেন কর্মরত হয়ে, তিনি নিজের মাইনে থেকে অর্থ দিয়ে গরিব মানুষকে ওষুধ থেকে শুরু করে এমন কি
অস্ত্রপচারেও সাহায্য করে থাকে। পরিবার জানায়, রাস্তায় গাড়ির ধাক্কায় পড়ে যায়, দাঁতে আঘাত লাগে তাকে নিয়ে স্থানীয় এক চিকিৎসক দেখানো হলেও কোনো রকম সুরাহা হয়নি। সেই কারণে হাসপাতালে নিয়ে গেলে জানা যায় চোয়াল ভেঙ্গে গেছে। চিকিৎসক স্মরজিৎ চৌধুরী নিজে উদ্যোগ নিয়ে প্লেট কিনে অপারেশন করে সুস্থ করে তুলেছেন।
হাসপাতাল সুপার সুব্রত মন্ডল জানান, রোগীদের পরিষেবা দেওয়াই আমাদের কাজ। সুস্থ করে ঘরে ফিরিয়ে দিতে পারলে নিজেদের ভালো লাগে। এদিন অস্তপচারটি সফল হওয়ার পরে রোগীর আত্মীয়রা কুর্নিশ জানায় চিকিৎসকদের।