Ahiritola case, পা ও মুণ্ডু কেটে টুকরো টুকরো করে ট্রলিব্যাগ বন্দি, আহিরিটোলা-কাণ্ডে হাড়হিম করা খু*নের পরিকল্পনা

সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ৫ মার্চ: আহিরিটোলা কাণ্ডে নয়া মোড়। ধৃত আরতি ঘোষ ও ফাল্গুনী ঘোষকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। গত মঙ্গলবার মধ্যমগ্রামের জলাশয় থেকে খুনে ব্যবহৃত বঁটি, দা, হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতদের সাত দিন নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। তারপরেই একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। যা শুনে চোখ কপালে উঠেছে পুলিশ মহলের।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি সুমিতা ঘোষ উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম থানার বীরেশপল্লীর বাড়িতে আসেন। তার মাঝখানে সুমিতাকে নিয়ে আরতী ও ফাল্গুনী বর্ধমানের সমুদ্রগড়ে সুমিতার স্বামী সুদীপ্ত ঘোষের কাছে গিয়েছিল। তবে কেন তারা সুদীপ্তর কাছে গিয়েছিল, তা নিয়ে ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। এছাড়াও হাইকোর্টের এক আইনজীবীর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সুমিতা ঘোষকে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে সুদীপ্ত ঘোষ ও ওই আইনজীবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পাশাপাশি বুধবার ধৃতদেরকে টানা জিজ্ঞসাবাদ করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের দিন সন্ধে বেলা সুমিতা ঘোষকে মা ও মেয়ে মিলে খুন করার পর পরিকল্পনা করতে থাকে কিভাবে মৃতদেহ লোপাট করা যায়। দেহটি কেটে একটা বড় ব্যাগে করে নিয়ে যাবে বলে স্থির করে তারা। তবে বাড়িতে যে ব্যাগ ছিল তাতে দেহ ঢোকানো সম্ভব হবে না সেটা বুঝতে পেরেছিল আরতি ও ফাল্গুনী। তার পরের দিনই কলকাতার বড় বাজারে গিয়ে একটি বড় ট্রলি কিনে নিয়ে আসে। বাড়ির ভিতরের মধ্যে বারান্দার দিকে দেহ রেখে চলে যায়। তবে নতুন ট্রলিতে সুমিতা ঘোষের মৃতদেহ সম্পূর্ণ ভাবে ঢুকছে না দেখে ঠিক করে মৃতদেহ কেটে ছোট টুকরো করবে। তারপর ব্যাগে করে নিয়ে যাবে তারা। সেই মতো সুমিতার দুই পায়ের হাড় হাতুড়ি দিয়ে ভেঙ্গে বটি দিয়ে কেটে টুকরো করে। এরপর মুন্ডু কেটে চার টুকরো করে, পুলিশকে এমনই জানিয়েছে আরতি ও ফাল্গুনী। ওই দিন রাতেই খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র একটি জলাশয়ে ফেলে দেয় তারা।

গত সোমবারই অভিযুক্ত ফাল্গুনী ও তার মা আরতি ঘোষকে বারাসত আদালতে পেশ করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে থাকবে তারা। প্রাথমিক পর্যায়ে দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরেকটি ট্রলি ব্যাগেরও হদিস পাওয়া গেছে। ফের দুই অভিযুক্তকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা শুরু হয়েছে। বিগত কিছুদিন আগেই সাতসকালে দুই মহিলা ট্যাক্সি করে আহিরিটোলা ঘাটে আসে। তাদের সঙ্গে ছিল একটা ট্রলিব্যাগ। সন্দেহজনকভাবে ওই দুই মহিলাকে সেখানে ঘুরতে দেখেন স্থানীয়রা। তারপরেই এলাকাবাসী ওই ব্যাগ খুলতে বলে তাদের। প্রথমে ওই দুই মহিলা বলে কুকুরের মৃতদেহ আছে ট্রলিব্যাগে। তারপর ব্যাগ খুলতেই চার টুকরো করা একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তারপরেই আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় ফাল্গুনী ঘোষ ও তাঁর মা আরতি ঘোষকে।

জানা গিয়েছে, নিহত সুমিতা ঘোষের একাধিক সম্পত্তি রয়েছে। বেশ কিছু সোনার গয়না ছিল। সম্পর্কে ফাল্গুনী ঘোষের পিসি শাশুড়ি। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদের জেরে খুন করা হয়েছে। শুধুই পারিবারিক বিবাদ, নাকি এর নেপথ্যে অন্য কারণ তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ঠিক কী কারণে খুন করা হল ওই মহিলাকে, তা তদন্ত করে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *