স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ২৭ জুন: প্রায় তিনমাস লক ডাউনের পর ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী কালী মন্দির রায়গঞ্জ শহরের বন্দর করুনাময়ী আদি কালীবাড়ি। কিন্তু করোনা আতঙ্কে নেই ভক্তের আনাগোনা, ফলে মন্দিরের দৈনিক খরচ জোগানোই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্দিরের সেবাইত সাধক বামাক্ষ্যাপার বংশধরদের। যেখানে প্রতিদিন কয়েকশো বা হাজার ভক্তের সমাগমে মুখরিত থাকত এই কালী মন্দির সেখানে এখন দিনে একজন বা দুজন ভক্ত আসে। ভক্তদের প্রণামী দিয়েই চলে মন্দিরের সমস্ত ব্যায়। করোনার আবহে সেই ব্যায়ভার বহন করাই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে মন্দিরের সেবাইত সাধক বামাক্ষ্যাপার বংশধর চট্টোপাধ্যায় পরিবারের।
লক ডাউন শিথিল হতেই দেশ ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সাথে সাথে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের বন্দর এলাকার উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী কালী মন্দির “বন্দর করুনাময়ী আদি কালীবাড়ি” ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্যানিটাইজার ব্যবহার ও মাস্ক পরিধান করে একসঙ্গে দশজনের বেশি মন্দিরে প্রবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে খুলে দেওয়া হয় মন্দিরের দ্বার। কিন্তু রায়গঞ্জ শহর তথা উত্তর দিনাজপুর জেলায় ক্রমবর্ধমান করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কেই ভক্তরা মন্দিরমুখো হচ্ছেন না।
শুধু রায়গঞ্জ তথা উত্তর দিনাজপুর জেলার ভক্তরাই নয় এই বন্দর করুনাময়ী আদি কালীবাড়িতে মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর, শিলিগুড়ি থেকে এমনকি বিহার থেকেও বহু পুন্যার্থীর আগমন হত। কিন্তু লক ডাউনের জেরে মন্দির বন্ধ থাকার কারনে সমস্যায় পড়েছেন মন্দিরের দেখভালের দায়িত্বে থাকা সেবাইত ও তাদের পরিবার। লক ডাউনের পরে মন্দিরের দ্বার খুললেও রায়গঞ্জ শহরে করোনা ভাইরাসের থাবা বসায় আতঙ্কে পূন্যার্থীরা মন্দিরে পুজো দিতে আসাই বন্ধ করে দিয়েছেন। আর এরফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন বন্দর করুনাময়ী আদি কালীবাড়ি মন্দিরের সেবাইত সাধক বামাক্ষ্যাপার প্রপৌত্র মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবার। দেবীর তিনবেলা পুজো অন্নভোগ সহ প্রচুর খরচ যা সম্পূর্ণটাই উঠে আসত ভক্তদের দেওয়া প্রনামীর টাকা দিয়ে। মন্দিরে ভক্ত আসাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে, খালি থেকে যাচ্ছে প্রণামীর বাক্স। ফলে দেবীর পুজো থেকে নিজেদের সংসার প্রতিপালন করাই এখন দায় হয়ে গিয়েছে তাদের।