আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১০ সেপ্টেম্বর: উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুর নেতাজিপল্লীর বাসিন্দা উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতী ছাত্র শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসায় গাফিলতিতে মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল স্বাস্থ্য কমিশনে। সেই মামলার প্রথম শুনানি হয় বৃহস্পতিবার। মামলার শুনানিতে বিচারক অসীম কুমার চট্টোপাধ্যায় অভিযুক্ত বেসরকারি হাসপাতাল বেলঘরিয়ার মিডল্যান্ড নার্সিংহোমের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হন। তিনি ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কমিশনে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা জমা ও এই মামলার অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি জমা করতে বলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শুভ্রজিতের মৃত্যুর ঘটনার ৬১ দিনের মাথায় আইনি লড়াইয়ে খানিকটা এগিয়ে গেল শুভ্রজিতের পরিবার। এদিন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি শুনানিতে অংশ নেন মৃত শুভ্রজিতের বাবা ও মা। শুভ্রজিতের পরিবারের পক্ষে আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টপাধ্যায় আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। মিডল্যান্ড নার্সিং হোমের পক্ষেও একজন আইনজীবী শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। উভয়ের উপস্থিতিতে যে শুনানি চলে সেখানে শুভ্রজিতের মা শ্রাবণী চট্টোপাধ্যায়কে বক্তব্য রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। তিনি নিজের চোখের সামনে দেখা ছেলের মৃত্যুর ঘটনা বিচারকের সামনে তুলে ধরেন। ধৈর্য্য সহকারে বিচারক এদিন শুভ্রজিতের সঙ্গে যে ব্যবহার বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই সময় করেছিল, সেই ঘটনা শুভ্রজিতের মায়ের কাছ থেকে শোনেন।
শুভ্রজিতের মা শ্রাবণী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মিডল্যান্ড নার্সিংহোমের হাতে লেখা একটি চিরকুট আমার ছেলেকে শেষ করে দিল। আমার ছেলের শরীরে জ্বর ছিল না। কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে থার্মাল স্ক্রিনিং হয়েছিল, তাতে আমার ছেলের অতিরিক্ত তাপমাত্রা ধরা পড়েনি। কিন্তু ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৫ মিনিটে কি পরীক্ষা করল বুঝিনি, করোনা বলে রিপোর্ট দিয়েছিল। তারপর তো মরেই গেল আমার একমাত্র সন্তান। এখন সারা ঘর ওর স্মৃতি আঁকরে বেঁচে আছি। রাতে এখন আর ঘুম আসে না। ন্যায্য বিচারের আশায় বসে আছি।”