আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ২৯ জানুয়ারি: বিদ্যাদেবীর আরাধনা তো দূরের কথা, রাজ্য অর্থ দফতরের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পঠনপাঠন চালিয়ে চালু রাখল স্কুল। স্কুল কর্তৃপক্ষের এহেন আচারণে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। পুজোর দিন স্কুল চালু রাখায় হাজির হয়নি অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও। এমনই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের কলিঠা হাইস্কুলে। এই ঘটনাকে মধশিক্ষা পর্ষদ এবং অর্থ দফতরের সমন্বয়ের অভাবকে দায়ী করেছেন প্রধান শিক্ষক।
প্রসঙ্গত, সরস্বতী পুজো উপলক্ষে আগেই ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারি ছুটি ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু তিথি অনুযায়ী কোথাও কোথাও বুধবার সরস্বতী পুজোর আয়োজন করায় রাজ্য সরকারের অর্থ দফতর ২৭ জানুয়ারি নোটিফিকেশন দিয়ে ২৯, ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। একইভাবে পুজোর আনন্দ ম্লান হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন পড়ুয়া থেকে অভিভাবকরা। এদিন আশেপাশের স্কুলের পডুয়ারা যখন বাগদেবীর আরাধনায় মেতে উঠেছে, তখন পুজোর আমেজ থেকে বঞ্চিত কলিঠা হাইস্কুলের পডুয়ারা। তবে উপস্থিতির হার ছিল সামান্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পড়ুয়ারা জানায়, সরস্বতী পুজো মানে স্কুলে জমিয়ে আড্ডা মারার দিন। মেয়েরা শাড়ি পরে বিদ্যার দেবীর কাছে সুশিক্ষার প্রার্থনা করবে। কিন্তু স্কুল সেই সবকে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজেদের ইচ্ছাকে প্রতিষ্ঠা করল। অভিভাবক অলোক মণ্ডল বলেন, পডুয়াদের কাছে সরস্বতী পুজোর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ছেলেমেয়েরা মা সরস্বতীর কাছে অঞ্জলি দিয়ে পড়াশোনা যাতে ভালো হয় সেই প্রার্থনা করে। এখানে পুজো তো দূরের কথা উল্টে স্কুলে যেতে বাধ্য করল। ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ এই দিন থেকে বঞ্চিত করা হল। অভিভাবক হিসাবে খুব খারাপ লাগছে। পডুয়াদের কাছে এটার অন্য বার্তা যাবে”।
স্কুলের প্রধানশিক্ষক নিয়ামতুল্লা বলেন, “মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়ন্ত্রণে স্কুল। কিন্তু পর্ষদের বার্ষিক ক্যালেণ্ডারে ৩০ ও ৩১ তারিখের ছুটির কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া আমাদের কাছে অর্থ দফতরের কোনও নির্দেশিকা আসেনি। তাই আমরা স্কুল ছুটি দিইনি”। জেলা স্কুল পরিদর্শক সুজিত সরকার বলেন, রাজ্য সরকার সরস্বতী পুজো উপলক্ষে তিনদিনের ছুটি দিয়েছে বলে সংবাদপত্র পড়ে জানতে পেরেছি। কিন্তু এদিনের ছুটির কোনও নির্দেশিকা পর্ষদ থেকে আমাদের কাছে আসেনি। অনেক স্কুল তিথি অনু্যায়ী এদিন পুজো করছে। আর স্কুলে সরস্বতী পুজো করতে হবেই বলে কোন বাধ্যবাধকতা নেই।