বোলপুরে মেলার মাঠে শুরু হল প্রাচীর তৈরির কাজ

আশিস মণ্ডল, বোলপুর, ২৮ সেপ্টেম্বর: শেষ পর্যন্ত পৌষমেলার মাঠে প্রাচীর তৈরির কাজ শুরু করল বিশ্বভারতী। আদালতের নির্দেশে এবং রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তায় সোমবার থেকে প্রাচীর তৈরির কাজ শুরু করা হল।

প্রসঙ্গত, অসামাজিক কাজ এবং মোটরবাইকের দাপাদাপি রুখতে পৌষমেলার মাঠ প্রাচীর এবং ফেন্সিং দিয়ে ঘিরে ফেলার উদ্যোগ নেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেই মতো ১৫ আগস্ট থেকে কাজ শুরু করা হয়। প্রাচীরের বিরোধিতা করে আন্দোলন শুরু করেন প্রবীণ আশ্রমিক, প্রাক্তনি, বর্তমান ছাত্রছাত্রী থেকে ব্যবসায়ীরা। ১৭ আগস্ট সকালে পতাকা ছাড়াই তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউরির নেতৃত্বে বিশ্বভারতীর প্রাচীর বিরোধী একটা মিছিল বের করা হয়। সেই মিছিলে অধিকাংশ লোক ছিল বহিরাগত। মিছিল প্রাচীরের কাছে পৌঁছতেই শুরু হয় তাণ্ডব। ভাঙ্গচুর করা হয় বিশ্বভারতীর একটি অস্থায়ী বাঁশ কাপড়ের ছাউনি। পে-লোডার দিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হয় মেলার মাঠের প্রধান গেট। লুঠপাট করা হয় নির্মাণ সামগ্রী এবং সিমেন্ট। ঘন্টাখানেকের বেশি সময় ধর চলে তাণ্ডব। সে সময় দেখা যায়নি কোনও পুলিশ আধিকারিক কিংবা কর্মীদের। এরপরেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিষয়টি হাইকোর্টে নিয়ে যায়। এরপরেই হাইকোর্টের চার সদস্যের একটি কমিটি তদন্ত শুরু করে। ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম তদন্তে আসে বিশ্বভারতীতে। এরপর ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর দুবার তদন্তে আসেন তাঁরা। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, আশ্রমিক, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তাঁরা। তারপরেই ভেঙ্গে ফেলা গেট পুনরায় নির্মাণের নির্দেশ দেন। যে গেট ভাঙ্গার সময় পুলিশ ছিল নিষ্ক্রিয় সেই পুলিশকে দাঁড়িয়ে থেকে গেট নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এবার শুরু হল প্রাচীর নির্মাণের কাজ। নিরাপত্তার দায়িত্ত্বে সেই নিষ্ক্রিয় পুলিশ।

যদিও এপিডিআর-এর শৈলেন মিশ্র বলেন, “আমরা প্রাচীর চাই না। প্রবীণ আশ্রমিকরাও একই মত জানিয়েছিলেন। জাতীয় পরিবেশ আদালতও প্রাচীরের বিপক্ষে। কিন্তু আদালত যেটা বলবে সেটা সকলকে মেনে নিতে হবে”।

ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার থেকে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, আমরা প্রথম থেকে প্রাচীরের বিরোধিতা করে আসছিলাম। এমনকি বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলাম। তখনই বুঝতে পেরেছিলাম আদালতের গঠন করা কমিটি বিশ্বভারতীর পক্ষের লোক।

বিশ্বভারতীর ছাত্ররা জানিয়েছেন, বিশ্বভারতীতে পঠন পাঠন শুরু হলে ফের আন্দোলন শুরু করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *