আমাদের ভারত, ২০ নভেম্বর: দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রক্রিয়া পরিকল্পনাহীন বলে উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠিতে বিএলওদের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিতের কথা বলেছেন। আর মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কথায়, মুখ্যমন্ত্রীর অস্বস্তি-হতাশা চরমে চলে গেছে বলেই এস আই আর- এর বিরোধিতা করে চিঠি লিখেছেন।
বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার মমতার পাঠানো চিঠির ছবি পোস্ট করে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, এসআইআর প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়ে এবং তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী। নির্বাচন কমিশনকে ৩ পৃষ্ঠার একটি পত্র পাঠিয়েছেন। একটি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী আসনে বসে তিনি বারবার এক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। সাংবিধানিক বিধি ব্যবস্থাকে প্রকাশ্যে অগ্রাহ্য করে, নির্বাচন কমিশন ও তার আধিকারিকদের প্রতি লাগাতার হুমকি ও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অথচ এইসব ভয় দেখানো এবং চাপ সৃষ্টির কোনো ফল হয়নি।” তাঁর দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত নাটক উন্মত্ত, তার পরেও সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে দিয়ে এস আই আর সম্পূর্ণ হবেই।
সুকান্ত মজুমদারের কথায়, প্রকৃতপক্ষে গত কয়েকদিনে মুখ্যমন্ত্রীর অস্বস্তি ও হতাশা চরমে পৌঁছেছে, কারণটা এই মুহূর্ত দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা যারা এতদিন তৃণমূলের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে নিশ্চিন্তে মহা সমারহে বাস করছিলেন, তারা এখন বিভিন্ন সীমান্তে বর্ডার খুলে যাওয়ার অপেক্ষায়। এই দৃশ্যগুলো মুখ্যমন্ত্রীর আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠার অন্যতম প্রধান কারণ, সম্ভবত সেই কারণেই তিনি এখন মরিয়া হয়ে এসআইআর প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন করেছেন, তবে কি আপনি এতদিন এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ভোটেই জয়ী হয়ে এসেছেন? দয়া করে বিষয়টি অবিলম্বে জনসম্মুখে পরিষ্কার করুন। তৃণমূল কংগ্রেসের হুমকি, হুঁশিয়ারি, মিথ্যাচার এবং অসংখ্য গুন্ডামির মধ্যেও ভারতের নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর প্রক্রিয়া বাস্তবায়ণ করছে। আর যদি মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে সেই বাস্তবতা মানতে না পারেন, তাহলে তাঁর উচিত অবিলম্বে পদত্যাগ করা।
যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দাবি নতুন নয়। দিন কয়েক আগেও শিলিগুড়িতে সরকারি মঞ্চ থেকে এসআইআর প্রক্রিয়াকে অবাস্তব পরিকল্পনা বলে দাবি করেছেন তিনি। একই বক্তব্য তুলে ধরে কমিশনকে চিঠিও দিয়েছেন। চিঠিতে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, এই প্রক্রিয়া শুধু পরিকল্পনাহীন বা বিশৃঙ্খল নয়, বিপদজনকও। এসআইআর প্রক্রিয়াকে হটকারী সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

